পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা । ভিতরের অর্থটা না বুঝিয়া উটাই বুঝিল । পূৰ্ব্বেকার লজ্জাস্কর অভিনয়গুলী চকিতের মধ্যে বায়স্কোপের জীবন্ত চিত্রের মতন মনের মধ্যে আসিয়া পড়িয় তাহার কর্ণমূল পৰ্য্যন্ত রাঙ্গা করিয়া তুলিল। ধিক্কারের সহিত সে নীরব হইয়া রহিল। এখন যে সে সকল জুরাশাস্বপ্ন মনের কোণেও জাগিয়া নাই যৌবনের সে সব দুৰ্দ্দাম চপলত তাহার উৎপত্তির মধ্যেই নিঃশেষে লীন হইয়া গিয়াছে সে কথা সে কেমন করিয়া তাহাকে বুঝাইয়া দিতে পারে । একবার ইচ্ছা হইল বলিয়া উঠে,— আমি তোমার রক্ষা করিতে লোকতঃ ধৰ্ম্মতঃই অধিকারী । সেই আত্মীয়তার সম্পর্কেও আমি তোমায় এ অবস্থায় ফেলিয়া যাইতে পারি না।” কিন্তু সে কথাটা ৰল! এখন যেন আরও কঠিন হইয়া উঠিয়ছিল। যে দিদি শাস্তির শ্রদ্ধা ও ভালবাসার সামগ্ৰী সেই দিদিরই স্বামী সে ! অমু তাহারই অংশ, তাহার হৃদয় শোণিতের বিন্দু-তথাপি এ কথা কেমন করিয়া ঘুণ লজ্জার মাথ৷ থাইয়া সে স্বমুখে ব্যক্ত করিবে ! দর্পহার ! এ কি প্রায়শ্চিত্ত ! তারপর আবার একটা বাধার কথাও মনে আসিল । হিন্দুর ঘরে তাছাদের সম্পকটাও এমনি জটিল সমস্তাযুক্ত যে তাহার প্রকাশেও এ অবস্থায় বড় একট। সুবিধা না ঘটিতেও পারে। মৃদ্ধ অনিচ্ছুকভাবে সে বিদায় চাহিল, শাস্তি ক্ষীণস্বরে জিজ্ঞাসা করিল “আর একবার আসবেন কি ?” নীরদ আগ্রহের সহিত উত্তর করিল “নিশ্চয়, কাল সকালেই আমি আসবো ।” সে চলিয়া গেল। শুষ্ক অশ্রুহীননেক্সে পোষ্যপুত্র।

শান্তি বহুক্ষণ পৰ্য্যস্ত তাছার গন্তব্য পথের দিকে চাহিয়া রহিল। ক্রমে যখন সন্ধ্যার স্নান ছায়ান্ধকারের মধ্যে গলির বাকের মুখে তাহার সুদীর্ঘাকৃতি মিলাইয়! গেল, তখনও সে পলকহীন চক্ষুকে সেই দিকেই স্থির রাখিয়া গঠিত মূৰ্ত্তির মত স্তব্ধ হইয়া বসিয়া রছিল। অবশেষে যখন মেঘভর আকাশ হইতে বজপাতের সাড়া আসিয়া ঝন্‌ঝন শব্দে ঘরখানাকে শুদ্ধ কঁপাইয়া তুলিল, এবং ঝুপ ঝুপ করিয়া জল পড়িতে আরম্ভ করিল তখন সে সেই লক্ষ্যহীন দৃষ্টি বহুদূর হইতে টানিয়া আনিয়া বিছানার উপরে লুটাইল্পী পড়িল । 蠱 82. শান্তি পাশ ফিরিয়া শুইয়া বলিল “চন্দর, আজ কি রোদ উঠেছে ? তবে জানলাট খুলে দাওনা আমার প্রাণটা যেন কেমন ইপিয়ে উঠছে।” কয়েকদিন হইতেই শাস্তির অমুখ চলি- “ তেছে—গত রাত্রি হইতে জর খুব বাড়িয়া উঠিয়াছে । খোলা জানালার মধ্য দিয়! বাহিরের পানে চাহিয়া দেখিবার পূৰ্ব্বেই দ্বারে জুতার শব্দ হইল ও পরমুহূর্বেই হেমেন্দ্র গৃহে প্রবেশ করিল ; শান্তির উৎমকনেত্র মুহুর্তে নিরাশায় স্নান হইয়। আসিল । সে অবসন্নভাবে বালিসের উপর মস্তক নিক্ষেপ করিয়া একটা হৃদয়ভেদী দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিল । হেমেন্দ্র তাহার অবস্থা লক্ষ্যও করে নাই,—সে আজ বহুদিন পরে অনেকটা যেন প্রফুল্ল । ছাত্ত ও শালখানা একটা বাক্সর উপর নিক্ষেপ করিয়া পরিশ্রান্তভাবে বিছানার উপর বসিয়া পড়িয়