পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وأن ه জগতের ভিন্ন জাতি সমূহেরো পরস্পরের চেহারা বিভিন্ন। শরীরের বর্ণে ও গঠনে, এক জাতি অপর জাতি হইতে পৃথক হইয়া রহিয়াছে। জাপানের লোকের চেহারার সঙ্গে ভারতবর্ষের লোকের চেহারার মিল নাই। হিন্দুর চেহারার সঙ্গে কাফ্রির চেহারার মিল নাই । অতিশয় কালো হিন্দুকেও কৃষ্ণকায় কাফ্রি বলিয়া কেহ কখনো ভুল করিতে পারে না। আমেরিকাতে এমন প্রায়ই দেখা যায় ষে রং দেখিয়া হঠাৎ কোনো হিন্দুকে লোকে কাফ্রি ভাবিয়াছে, কিন্তু মুখের দিকে চাহিয়াই, অপরাধীর মত, ক্ষমা প্রার্থনা করিয়াছে। শরীর-গঠনে যেমন, মনের গঠনেও সেইরূপ প্রত্যেক জাতির এক একটা বিশেষত্ব আছে। এই বিশেষত্ব তাহাদের ভাষার গঠনে প্রকাশিত হইয়া থাকে। কতকগুলি ভাষাতে অহং প্রত্যয়ের জ্ঞান প্রবল, কতকগুলিতে ইদং প্রত্যয়ের উপরেই বোক বেশী। সংস্কৃত ও সংস্কৃতের সঙ্গে যাদের মৌলিক সম্বন্ধ আছে, লাটিন, গ্ৰীকৃ প্রভৃতি আৰ্য্যভাষাতে, অহং আমি, আমি আছি, এই পদ সিদ্ধ হয়, অপর জাতির ভাষাতে ইহা সিদ্ধ হয় না। শুদ্ধ অস্তিত্বের জ্ঞান স্মরণাতীত কাল হইতে,—ইতিহাস যে কালের খোজ পাইয়াছে,—তার বহু পুৰ্ব্ব হইতে, প্রাগৈতিহাসিক যুগে, এই সকল জাতির ভিতর আশ্চৰ্য্যরূপে ফুটিয়াছিল, তাই তাদের ভাষায় শুদ্ধ অস্তিত্ব-জ্ঞাপক, অহং অস্মি ইত্যাকার পদ নিম্পন্ন হইতে পারে। এমন ভাষাও আছে, গাছ এই অস্তিত্বকে ব্যক্ত করিতে যাইয়া সৰ্ব্বদাই কোনে ক্রিয়ার সঙ্গে তাহাকে যুক্ত করিয়া ভারতী । কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ দেয়। আমরা যেখানে বলি, রাম আছে, সেখানে তারা বলে রাম বসিয়া আছে, বা দাড়াইয়া আছে, ইত্যাদি। এই যে বিভিন্ন জাতির আপন আপন ভাষার গঠনে এক একটা মৌলিক বিশেষত্ব আছে, ইহাতে এদের নিজস্ব চিস্তার ধরণটা প্রকাশিত হইতেছে। যে যে ভাবে চিন্তা করে, তার ভাষা সেইরূপই হয় । ইহা ব্যক্তির সম্বন্ধে যেমন সত্য, জাতিসমূহের সম্বন্ধেও সেইরূপ সত্য । ১৪। চিন্তা ও ভাষা । ভাষার মুখ্য অঙ্গ তিনটী ; কৰ্ত্তা, কৰ্ম্ম, ক্রিয়া । এ তিনের মধ্যে যে ভাষায় যেরূপ সম্বন্ধের প্রতিষ্ঠা করে,তাহারই দ্বারা সেই ভাষা যাহারা ব্যবহার করিয়া আসিয়াছে, তাহদের চিন্তার ধরণ জানিতে পারা যায়। কোনো জাতির ভাষায় কৰ্ত্তার উপরেই ক্টোক বেশী, যাবার কোনো ভাষায় কৰ্ম্মের প্রতিই দৃষ্টি বেশী । এমন ভাষাও দেখিতে পাওয়া যায়, যাহাতে কৰ্ত্তার উপরেও নয়, কৰ্ম্মের উপরেও নয়, কিন্তু শুদ্ধ ক্রিয়ার উপরই চিন্তার সকল জোরটা যেন আসিয়া পড়িয়াছে। রাম আঘাত করিয়াছে, সকল আৰ্য্য ভাষাতেই এরূপ পদ নিম্পন্ন হয়। এখানে রাম কৰ্ত্তা, রামই এখানে মুখ্য শব্দ । কাকে আঘাত করিয়াছে, কিরূপে আঘাত করিয়াছে, এ সকল বিষয় সম্পূর্ণ অগ্রাহ করিয়া সৰ্ব্বাদে কে আঘাত করিধাছে, মন এখানে তারই সন্ধান লইয়াছে। যে জাতিয় ভাষায় এই পদ নিম্পন্ন হয়, সে . জাতির চিস্তাতে কর্তা বা অহংএর জ্ঞানই সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রবল। আবার এমন ভাষাও আছে, যাহাতে এই