পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৫০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা । জলদসু্যদিগকে শাসিত করা এবং জলমগ্ন নাবিকগণকে এই দ্বীপের বর্বর অধিবাসীর অত্যাচার হইতে রক্ষা করাই কর্ণওয়ালিসের উদ্দেশ্ব ছিল। এই বনসঙ্কুল স্থানকে মনুষ্যবাসের উপযুক্ত করিবার জন্যই সৰ্ব্বপ্রথম কয়েদীগণকে তথায় শ্রমজীবী রূপে পাঠান হয়। সে সময়ে ইহাকে অপরাধীগণের নিৰ্ব্বাসনস্থল করিবার কল্পনা পৰ্য্যস্ত কেহ করে নাই। যাহা ইউক ব্লেয়ার সাহেব একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচিত করিয়া তথায় বসতি স্থাপন করা স্থির করিলেন । এই স্থানটি আজিও বোট ব্লেয়ার নামে পরিচিত। কিছুকাল আযোজনের পর স্থিৰ হইল যে পোর্ট রেযার ত্যাগ কুরিয়া আরও উত্তরে বসতি স্থাপন কর। অপশুক । ফুলগু: ১৭৯ই সালে সে স্থান ত্যাগ করিয়৷ উত্তর আন্দামান দ্বীপে বসতি স্থাপন করা হইল। কিন্তু এই স্থানে জলবা এরূপ ভয়ঙ্কর যে অবশেষে বাধ্য হইয়। এস্থলে সালের চেষ্ট ত্যাগ করিতে হইল। ইহার পরে লংকাল আর এই দ্বীপের প্রতি কেহ লুণধোগ দেন নাই। পরে ১৮২৪ সালে ব্রহ্মদেশ আক্রমণে প্রেরিত নৌবাহিনী এই দ্বীপ তাহীদের আশ্রয় স্থল করিল। তাহার পর হইতে মধ্যে সবো পুনরায় ইহার উল্লেখ দেখিতে পাওয়া ১৮৪৮ সালে এমিলি নামে একখানি জাহাজ ইহার পশ্চিম উপকূলে লাগিয়া ভাঙ্গিয়া যায়। যাত্রী ও নাবিকগণের রক্ষা করিবার জন্য শত চেষ্টা সত্ত্বেও দ্বীপবাসীরা তাহাণের অধিকাংশকেই নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করে । ১৮৫৬ সাল পয্যন্ত প্রায়ই এইরূপ নরহত্যার বৃত্তান্ত শুনিতে পাওয়া বায়। পরে গবমেণ্ট পুনরায় এই দ্বীপ অধিকার করিলেন । তাহার পর বৎসরেই ভারতে বিদ্রোহ হয়, গবমেন্ট ধে সকল বিদ্রোহীকে বন্দী করিলেন তাহাদিগকে নিরাপদে রাখিবার জন্য কোন একট। স্থানের বিশেস চয়ন-অfন্দামান দ্বীপ । e ) సె আবখ্যক হইয়া পড়িল । সেই জন্য ১৮৫৭ সালের শেখ ভাগেই এই স্থান সৰ্ব্বপ্রথম নিৰ্ব্বাসন স্থল রূপে ব্যবহৃত হইল। এই সালেই পোর্ট ব্লেয়ার হইতে মুক্ত এক কয়েদী লর্ড মেয়োকে হত্যা করে। আন্দামান বাসীর সহিত সৌহৃদ্য স্থাপনের জন্য ইংরাজ কৰ্ম্মচারীগণ তথায় এক আশ্রম স্থাপন করিয়াছেন। এই আশ্রমে যে কোন দ্বীপবাসী আসিয়া যতদিন ইচ্ছা বিনাব্যয়ে বাস করিতে পারে। তাছাদিগকে থাকিতে নিষেধ করা দূরে থাক, বরং আরও দীর্ঘকাল থাকিবার জন্ত উৎসাহই দেওয়া হইয়t থাকে। এখানে বিনামূল্যে তাহাদিগকে সাহায্য দেওয়া হয় । এখানে তাহাদের মাছধরা লী কচ্ছপধরা ভিন্ন অন্য কোন কৰ্ম্মই করিতে হয় না। এই কৰ্ম্মটুকুও তাহদের সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাধীন, ইচ্ছ না করিলে তাহার। ইহাও কল্পিতে বাধ্য নহে। অনেকে আশ্রমে থাকিয়া কেবল আনন্দ ও বন্যপশু শীকার করিয়া বেড়ায় । তবে আশ্রমের নিয়ম এই যে এই সকল লোক আশ্রমে অবস্থান কালে যাহ। কিছু সংগ্ৰহ করিৰে তাহ। আশ্রমের সম্পত্তি বলিয়াই গণ্য হইবে । এই উপায়ে এক্ষণে আশ্রমের সমস্ত ব্যয় গৰমেন্টের বিনা সাহায্যে চলিয়া যায় । আদামান বাসীরা বন্যজীবনই ভালবার্সে। সভ্যতার প্রতি তাহাদের কোন আকর্ষণই দেখা যtয় না । ইহার আশ্রমে আসিয়া যখন বাস করে তখনও নিজেদের সেই চিরাভ্যস্ত ভাবেই কালতিপাত করে এবং যখন পুনরার অরণ্যের মধ্যে চলিয়া যায় তখন যেন একটা অভিনব আনন্দ ও সুখ অনুভব করে বলিয়া বোধ হয়। গভীর বনের মধ্যে হিংস্র পশু ও শত্রু পরিবেষ্টিত হইয়া দুরন্ত ভাবে জীবন অতিবাহিত করাহ তাহার যথার্থ মুখ ভোগ বলিয়া মনে করে ।