পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩১৭.djvu/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ స్త్రి একেবারে নিঃসংশয় হইতে হইবে, তর্ক ও আলোচনা কোন দিন আমাদের নিঃসংশয় করিয়া দিতে পারিবে না । হৃদয় রতন যাচিয়া মেলে, অযাচিত ও পাওয়া যায় কিন্তু যে যাচাইয়া গ্রহণ করিতে চাহে তাহাকে ঠেকিতে হয় । আমাদের প্রাচীন শিল্পটাকে আমরা তামাকু ধরাইবার টিকাটার মত যৎসামান্ত করিয়া দেখি সুতরাং তাহার যেখানে সেখানে আগুন ধরাইয়া সেটাকে ছাই ভস্ম করিয়া দিতে আমাদের কোন ভাবনা উপস্থিত হয় না । আমরা কথায় কথায় বলিয়া ফেলি, ভারত শিল্পের আকৃতি প্রকৃতিটা ইউরোপীয় দস্তুর দিয়া একটু আধটু সোজা করিয়া দিলে ক্ষতিটা কি ? এস তাহার বেমানান্‌ হাত পায়ের স্থানে গ্ৰীক মুক্তির হাত পা কাটিয়া বসাইয়া দেওয়া যাউক, তাহার চম্পক অঙ্গুলির পরিম,ণ উখা ঘসিয়া থাটো করিয়া ফেলি ; তাহার গালের একদিক সাদা একদিক কালো করিয়া তাহার মুচেহারাটা ফুটাইয়া তুলি, তাহার তপস্তায় শীর্ণ দেহটাকে গোস্ত খাওয়াইয়া তাজা করিয়া তোলা যাক—ঠিক গ্ৰীসিয় কুস্তিগিরের মত ! শিল্প যে ছেলাখেলা নয় আমাদের জীবনের উপরে তাহার একটা প্রভাব আছে এটা যদি আমাদের জ্ঞান থাকিত তবে এত সহজে আমরা ভারত শিল্পের উপরে ছুরি চালানো ব্যাপারে উৎসাহের সহিত যোগ দিতে পারিতাম না ! যাহার হাতে কলমে শিল্প চর্চা করিঞ্জ। থাকেন তাহারা জানেন যে কোন চিত্রের বা কোন মূৰ্ত্তির রেখাপাত বা বর্ণ সন্নিবেশ ভারতী । অগ্রন্থায়ণ, ১৩১৭ প্রথায় সামান্ত মাত্র ব্যতিক্রম ঘটাইলে চিত্রটার বা মূৰ্ত্তিটার ভাবে ও অর্থের কতই না বদল হইয় পড়ে। চিত্রণের মুখে গঠনের বেলায় যেটা বাহির হয় তাহার উপরে হাত চালাইতে যিনি শিল্পি তিনিই সাহস করেন না আর আমরা অতি সহজে বলিয়া ফেলি কেন এরূপ পরিবর্তনে দোষ কি ? দোষ যে কি তাহ প্রস্তাবকারীর চোখে না পড়িতে পারে কিন্তু যাহাঁদের প্রাণ আছে প্রাণ থাকিতে তাহারা আনাড়ির হাতে ভারত শিল্পের চিকিৎসার ভার দিয়া নিশ্চিন্ত থাকিতে পারে কই ! যুগযুগান্তর ধরিয়া ভারত শিল্পের ভিত্তিতলে কত না শিল্পের কত তরঙ্গ আসিয়া বারম্বার আঘাত করিয়াছে কিন্তু কোন দিন তাহাকে স্বস্থানচ্যুত করিতে পারে নাই কিন্তু এই যে তাহার আশ্রয়ভূমি আমাদের মন তাহার ভিতর হইতে যে একটা জিঘাংসা প্রবল ভূমিকম্পের মত সজোরে তাহাকে নাড়া দিতেছে তাহাতে ভারত শিল্পের পতন অবশুম্ভাবী। ভারত শিল্পের মন্দির চুড়া পাক মসলায় গাথা দুই চারিটা ভূমিকম্প সে সহিবে কিন্তু তাহার অধিক নয়। সেই প্রলয়ের দিনে যে ভূমি তাহাকে নাড়া দিতেছে সেই ভূখণ্ডের সহিত কোন অতলে সে প্রবেশ করিবে তাহাই ভাবিয়া দেথ । চ বর্গের উষ্ট্রবঙ্ক এর মত ভারত শিল্পটা যদি বা আমাদের চক্ষে বিসদৃশ ঠেকে তথাপি একে N করিয়া যেমন আমাদের কোন লাভ নাই তেমনি ভারত শিল্পকে পাশ্চাত্য শিল্পের ভারবাহী গর্দভ করিয়াও আমাদের মনস্কামনা সিদ্ধ হইবে না। ঐঅবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর।