পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, সপ্তম সংখ্যা ন, মানুষের বুক চিরিয়া দেখানে—যেমন ভিধকের শল্য, চৰ্ম্ম-চক্ষুর অন্তরালে জীব-দেহের ক্রিয়ার ইতিহাস আবিষ্কার করে, ঔপন্যাসিকের লেখনী মানব-হৃদয়ে ক্রিয়ার উৎপত্তি, পরিণতি ও লয়ের মধ্য দিয়া বাধাহীন ধারাটির অনুসরণ-কাহিনী লিখিয়া যায়। কোন কোন উপৃষ্ঠাসে আরো একটু “ফাউ" পাওয়া যায়। সেট আর-কিছু নয় –কি-হইতে-পরিত, কি-হওয়া-উচিত ছিলর প্রতি একটা প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত , একটা কিছুপ্রকাশ–কিছু-অপ্রকাশ কেহ কেহ মনে করেন সেটা একেবারে বাহুল্য নয় । তাহার অবখ্যকতা স্বীকার করেন না । অtভয! অীবীর কেহ ইহাতে সংযমের গণ্ডীর মধ্যে ললিত ও বিকশিত হইতে পারে নাই, এমন-একটা তরুণ নৌবনের ইতিহাস : করুণ আখ্যায়িক অসঙ্কোচে ফুটিয়া উঠিয়াছে। চলিতে-চলিতে-হঠাৎ-বাধা-পড়ায়-জীবনের অক্ষেপময় অসমাপ্ত কাহিনী ইহাতে কাব্যরসের মধু আহরণ করিয়া দিয়াছে । অভিযুক্ত অসমীর কাঠ-গড়ার বেষ্টনীর মধ্য হইতে প্রাণ দণ্ডে দণ্ডিত অপরাধীর ফাসি-কাঠে যাইবার পথের সকল কথাই বলা আছে ;–কিন্তু বলা হয় নাই ত সেই গোপনতমগোপন একটী কথ!—তাত্মাপরাধ-স্বীকার। সে কথাটী বলিতে-বলিতে বলা হয় নাই ! সহস্র আঘাত-উত্যক্ত একটা ক্ষুদ্র প্রাণের ভিতর এই যে অবিরাম সংগ্রামের ত্বরিত ছবি—-ইহাই ন নাটক ? কেন এমন হয় ;--কেন সে স্বীকার কবিতে চায় ন ? তরুণ যৌবন বসন্তের উদার অালোক ও বাতাসে স্বচ্ছন্দ-মুকুলিত পুষ্পের মত । সে নিজে সুন্দর ; সুন্দর তাহার চোখে চারিদিক সুন্দর। তাহার অজ্ঞাতে, কখন এক কীট তাহীর মৰ্ম্মস্থল কটিয়া ফেলে,—সহসা জাগিয়া দেখে যে অসীম-আশ|ভরা তাহার জীবন, একেবারে নষ্ট হইয়া গিয়াছে । তখন সেই কীটের প্রতি তাহার ক্রোধ হয় না, বিদ্বেষ হয় না। ধূর্জটির মহাক্রোধের মত, উদ্বেল হইয় উঠে শুধু ঘৃণা ও করণ। সেই উচ্ছ,সিহ-ঘৃণার আতিশয্যে চিরন্বন্দর পৃথিবী এক নিমেষে তাহার নিকট তিক্ত, ঐহীন হইয় যায় ! বিশ্বকে যেন তাহার বিদ্রোহী মনে সমালোচনা b 3 సె হয়! সেই বিদ্রোহী চারিপাশের আক্রমণ প্রতিরোধ করিতে, তাহার অন্তরাত্ম আত্মাভিমানের দুর্গে আশ্রয় লয় । চারিধারে বিপুল-এত—আর সে অসীম একেল— এই ভাবনা তাহার চিত্তকে কিছুতেই হার মানিতে দেয় ন—সে কিছুতেই স্বীকার করিতে পারে না সে দোষী । -মহাকবি এই ভাবটী কেমন নৈপুণ্যের সহিত আভাষে ফুটাইয়া গিয়াছেন। বন্দীর চক্ষে আদালত রহস্ত মাত্র, বিচারক কৰ্ত্তব্য-জ্ঞানমূঢ় । এমন কি তাহার কন্তুর নিকটও সে কথা বলিতে পারিল না । প্রাণ-দগু-গ্ৰহণ-উদ্যত পিতাব সহিত তাহার কস্তার শেষ মিলন, এই ঘটনা-সংস্থাপনে মহাকবি কতখানি কৃতিত্ব দেখাইয়াছেন । সেই সত্য,—অপরাধীর নিকট হইতে জগৎ সরিয়া যায়,—কেমন ইঙ্গিতে বুঝাইয়াছেন। নাটক, কাব্য ও উপন্যাস গুড করিয়া, গুলিয়। কি উপাদেয় সামগ্ৰী স্থষ্টি করিয়াছেন । প্রাণের মায় । সে যে মানুষের সহজাত বন্ধু । কোন প্রণয়ী তাহার আকর্ষণ তুচ্ছ করিতে পারে? শেষ মুহূৰ্ত্ত অবধি সে বলিতে কাতর হয়, “সময় হয়েছে নিকট এখন বঁ।ধন ছিড়িতে হবে।” বিশেষতঃ, যে হৃদয় সহস|-খণ্ডিত, অতৃপ্তির নেশায় সে সত্যের আলোকের সন্ধান করিতে পারে না – গ্রন্থখনিতে এই সত্য পরম রমণীয়ভাবে ফুটিয়৷ উঠিয়ছে ! এতক্ষণ আমির গ্রন্থের আলোচন-প্রসঙ্গে তাহfরই সৌন্দর্ঘ্যে অবগাহন করিতে ছিলাম। সমালোচনা করি নাই । অনুবাদে সৌরীন্দ্রবাবুর কৃতিত্ব কত দূর— সেটুকু বল প্রয়োজন । সৌরীন্দ্রবাবুর রচনা সাধারণতঃ সুললিত, ভাষা মনোহর । কুয়াশাচ্ছন্ন হয় না ; চাতকের মত একেবারে মেঘলোকে অন্তৰ্দ্ধান হইয়| মায় না। বরাবর পাঠকের চিত্তটিকে হাত-ধরিয়া লইয়া যায় ! অথচ তঁহীর চিন্ত| ইংরাজি ভাবে পরিপুষ্ট। পদ-বিদ্যাস সুন্দর উপভোগ্য। শব্দ-চয়নেও অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় পাই। উহার বর্ণনা-কৌশল ও বাকৃভঙ্গী সম্পূর্ণ র্তাহার নিজস্ব । তেজস্বিতীর সহিত যুক্তপ্রাণত ভবের সহিত ভাষার স্বাভাবিক : মিলন উtহার রচনাটিকে চিরদিনই সুন্দর কখনো ভাষার মধ্যে ভাব কোথাও