পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b obr জাতিতে চাষা ; তাহার যখন কেহ নাই ও তিনি এই গ্রামেই চিকিৎসা ব্যবসায় অবলম্বন করিবেন স্থির করিয়াছেন তখন ইহাতে আর কোন গোল হইবার সম্ভাবনা নাই । আনন্দে বিহবল হইয়া পিতা বলিলেন —“পরমেশ্বর আপনাকে আশীৰ্ব্বাদ করুন ।” আমি আর গৃহে প্রবেশ করিলাম না । সাবুর বাটি ছড়িয়া ফেলিয়া দিয়া আপন শয্যায় শুইয়া পড়িলাম । দুঃখ ও আনন্দ যুগপৎ আমার হৃদয়ে তুফান তুলিয়া দিল । আনন্দাতিশয্য দুৰ্ব্বল শরীরে সহ হইল না । সহসা রত্রে পিতার অবস্থা অত্যন্ত মন্দ হইয় পড়িল । পরদিন সকালে, আমার হৃদয়ের দেবতার হস্তে আমাকে সমর্পণ করিয়া, আমাদের আশীৰ্ব্বাদ করিতে করিতে পিতা স্বর্গারোহণ করিলেন । আমি শোকে মুহমান হইয়া পড়িলাম। এক মাসের মধ্যে শ্রাদ্ধ সপিণ্ডকরণ প্রভৃতি শেষ হইল। আমাকে তিনি বিবাহ করিলেন। বিবাহ কাহাকে বলে জানি না বিবাহ কখনও দেখি নাই । একদিন তিনি পুরোহিত লইয়া আসিয়া বলিলেন “আজ বিবাহ ।” পুরোহিত র্তাহার হাতে আমার হাত দিয়া মন্ত্র পড়াইলেন। দুই বৎসর বড় মুখে কাটিল,—সে মুখের তুলনা নাই। এই দুই বৎসরে তাহার নিকট একটু একটু লেখাপড়া শিখিলাম। চাষার মেয়ে ভদ্র গৃহের উপযুক্ত হইলাম। দ্বিতীয় বৎসরের শেষে নয়নের আনন্দ পুত্র জন্মগ্রহণ করিল। তৃতীয় বৎসরের মাঝামাঝি, একদিন তিনি অত্যন্ত ব্যস্ত হইয়া আসিয়া আমাকে জানাইলেন যে বিশেষ প্রয়োজনে তাহাকে उांबडी অগ্রহায়ণ, ১৩২০ কলিকাতা যাইতে হইবে। এক মাসের মধ্যেই ফিরিবেন। বিবাহ হইয় অবধি র্তাহার কাছ ছাড়া হই নাই । আসন্ন বিরহ কল্পনায় আমি বড়ই কাতর হইলাম। তিনি আমাকে বক্ষে লইয়া, আদর করিয়া, নিদ্রিত পুত্রের মুখচুম্বন করিয়া সেই রাত্রেই গৃহত্যাগ করিলেন। সেই তার সঙ্গে আমার শেষ দেখা ! ছয় মাস কোন সংবাদ পাইলাম না। র্তাহার ঠিকানা জানি ন!— পত্র লিখিয়া সংবাদ লইতে পারিলাম না । ভাবনা চিন্তায় শয্যাশায়ী হইলাম । ছয় মাস পরে একদিন একখানা পত্র পাইলাম। আনন্দে অধীর হইয়া পত্র খুলিলাম। পড়িয়া বজাহত হইলাম । আমি তাহার পরিণীত পত্নী নহি । যে বিবাহ দিয়াছিল সে পুরোহিত নহে,— তাহারই এক বন্ধু,-বিবাহ অসিদ্ধ। তিনি পূর্বেই কোন জমীদারের একমাত্র সস্তানের পাণিগ্রহণ করিয়া জমীদার ভবনেই বাস করিতেন । শ্বশুরের সহিত মনোমালিন্ত হওয়াতে এই দুই বৎসর অজ্ঞাতবাসে ছিলেন। সম্প্রতি সংবাদ পত্রে শ্বশুরের মৃত্যু সংবাদ পাঠ করিয়া, স্বদেশে প্রত্যাগমন করিয়াছেন। পত্রে তিনি ইহাও জানাইয়াছেন যে আমাকে তিনি একেবারে পরিত্যাগ করিবেন না— মধ্যে মধ্যে আমাকে দর্শন দিবেন। এবং আমাদের মাতা পুত্রের ভরণ পোষণের সমস্ত ব্যয় ভার তাহার। পত্রে কিছু অর্থ ছিল। পুত্ৰ পড়িয়া বজাত হইলাম। আমার সমস্ত গৰ্ব্ব, আনন্দ, সমস্ত আশা ভরসা এক মুহূর্তে ধূলিসাৎ इड्रेट । ●