পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, অষ্টম সংখ্যা বঞ্চিত। কোন বাঙ্গালী ময়রা ও অঞ্চলে মিষ্টারের দোকান খুল্লে বোধ করি বিলক্ষণ এক হাত লাভ করতে পারে । আহারের সময় মারাঠী গৃহস্থ রেশমের পট্টবস্ত্র ( সোল ) পরিধান করেন। আহারান্তে ইংরাজী Ceito. After dinner Speech-q; otকিছু বলা একটা মাৰাঠী রীতি আছে সেট। আমার খুব ভাল লাগত। বক্ততা না হোক কোন সংস্কৃত বা মারাঠী শ্লোক কিম্বা গীতের এক চরণ – এইরূপ র্যার যা ইচ্ছ। আবৃত্তি করেন, তাতে উপস্থিত নিমন্ত্রিতমণ্ডলীর বেশ আমোদ হয় । ডাক্তারে বলে যে আহারের সময় হাসিখুসি মিষ্টালাপে পরিপাকের সাহায্য হয় ; অতএব উক্ত নিয়ম বৈদ্যশাস্ত্রসম্মত বলতে হবে । বিবাহ ও ভোজনবিচার হিন্দুয়ানীর এই দুই দুর্গপাল। বাঙ্গালাদেশে ভোজন বিচারের নিয়ম অনেকটা শিথিল হয়ে এসেছে মনে হয়—অন্ততঃ কলকাতায় । আমরা সহুরে মানুষ কলকাতার কথাই বলতে পারি । কিন্তু বোম্বায়ে দেখতে পাই এই অন্তর্জাতিক ভোজনের সবে মাত্র স্বত্রপাত হয়েছে । “আৰ্য্যসজঘ” Brotherhood) নামে ওদেশে মাননীয় জষ্টিস চন্দবারকরের নেতৃত্বে একটি সজ স্থাপিত হয়েছে। তার জাতভাঙ্গা পণে কাৰ্য্যারম্ভ করেছেন । তাদের উদ্যোগে সম্প্রতি ঐরুপ একটা মিশ্রভোজ দেওয়া হয়—“প্রীতিভোজন”। কিন্তু এই প্রতি ভোজন তাদের জাতভাইদের অপ্রতিকর হয়ে উঠেছে । তার সভাসমিতি ডেকে তিলকে তাল করতে উদ্যত হয়েছে। মজা এই যে, দুজন মাছার জাতীয় ভদ্রলোক এই ভোজনে যোগ (Aryan আমার বোম্বাই প্রবাস సెed দিয়েছিল, শুনছি নাকি তাদের নিজের জাত থেকে বহিষ্কৃত করবার হুকুম জারী হয়েছে, অথচ মাহার জাত অস্ত্যজ বলে হিন্দুসমাজের অস্পৃষ্ঠ । যা হোক মারাঠীদের মধ্যে এই জাতিভেদের বাধা অতিক্রম করবাব এক সহজ উপায় আছে । আমি দেখেছি যে বিভিন্ন জাতের মিশ্রভোজনে তাদের কোন আপত্তি নেই, কেবল স্বতন্ত্র পংক্তিতে আসন দেওয়া চাই । এই নিয়মে কোন মুসলমানও হিন্দুভোজে যোগ দিতে পারেন, খালি পংক্তিভেদের ব্যবস্থা করলেই হ’ল । এই নিয়ম আমাদের orthodox হিন্দুসমাজে প্রচলিত হলে মন্দ হয় না। এই সামান্ত রাস্তাটুকু খুলে গেলেও যথালাভ মনে করা যায় । মিশ্রভোজন থেকে স্ত্রীপুরুষের একত্র ভোজন মনে পড়ল । আমরা ইংরাজদের ভোজনগৃহে নরনারীর মেলা দেখতে পাই । যুরোপীয় সভ্যজগতের এই সাধারণ রীতি। পারসী বিদ্বন্মগুলী এই রীতি অবলম্বন করেছেন। মারাঠীসমাজ এখনো অতদূর এগোতে পারে নি, তবে পরিবেশনের বেলায় গৃহিণীর আগমনেও কতকটা তৃপ্তি লাভ করা যায় । আমাদের মত নয় যে, কোন গৃহস্থের গৃহে নিমন্ত্রণে গেলে গৃহকত্রী পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকেন, তার হাতের বালাগাছটি পর্য্যন্ত দৃষ্টিপথে পড়ে ন । সাতারায় এখনকার রাজা যিনি (শিবাজী রাজার বংশধর) শুনতেম তিনি দুবাসনরত নিতান্ত অপদার্থ জীব, নেশার ঘোরে কোথায় পড়ে আছেন তার দেখা পাওয়া ভার।