পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা ভক্তিনাথকে পত্রে যথাসম্ভব সংবাদ পাঠাইয়া বৌভাতের মধ্যে সপরিবারে আসিতে লিখিলেন। বলিলেন, “আমার তো দুজনেই সমান আমি কেন তার সঙ্গে এতটা তফাৎ করি ।” বড় বধু আসিয়া দেখিয়া শুনিয়া অবাক হইয়া গেলেন, মাসির এতথানি দৌলত ভোগ করিতে লাগিল ছোটবাবু আর তাহাদের অবস্থা যথাপুৰ্ব্বং তথ্যপরম্‌! মনে মনে গস্গসিয়া কাহারও সহিত ভালরূপে একটা কথাও কহিতে পারিলেন না, ভাবিলেন একেই বলে কলিকাল, যে দেবতা বামুন মানলে না সেই হলো রাজেশ্বর আর আমরা যে ভিটেয় সাজ জ্বালচি, বার মাসে তের পাৰ্ব্বণটি বাদ দিচ্চিনে একচোখে ঠাকুর কি চোখের মাথা খেয়েচে এসব দেখতে পায় না ?” কল্যাণীর কাছে পরিচয়ের আবশুক করে না ; লে হাসি মুখে ভ্রাতৃজায়াকে প্রণামপুৰ্ব্বক হাত ধরিয়া টানিয়া লইয়া যাইতে যাইতে বলিল “কেমন জা হয়েচে দেখ সে বৌদি, এমন কখনও দেখনি।” বড় বধুর কাণে শচীকান্তের স্ত্রীর এতটা প্রশংসা সহিল না, তিনি মুখ টিপিয়া একটু খানি অবজ্ঞার হাসি হাসিয়া কহিলেন “রূপ যদি বল্পে তো বলি, আমাদের ওখানে মনীশ ঠাকুরপোর সঙ্গে বাকৃদত্ত একটি মেয়ের যেমন রূপ দেখেচি এমন আর কোথাও দেখব না, মেয়েটির নাম কমল, তা নামেও যা কাজেও তেমনি একেবারে যেন লক্ষ্মী—‘ওমা এ কে ? এই কি বউ নাকি ? স্যা ! সেকি ! এই তো সেই কমল |” বাগদত্ত। సె&$ (81 ) মস্ত বড় একটা ফাডু আসিয়া যখন কাটিয়া যায় তাহার পর কিছুক্ষণ মনের মধ্যে বড় একটা উদারতার হাওয়া বহিতে থাকে। ছোট খাট অশান্তি সেই বড় বিপদের ভিতর লীন হইয়া যায়, নুতন স্বাস্থ্য লাভের মত হৃদয়ে নবীন শাস্তির উদ্বোধন করিয় নবজীবন গঠিত করে, মনে আর কোন বিক্ষোভ যেন সে সময়ে স্থান পায় না । নন্দকিশোর প্রবল ধাক্কা খাইয়া উঠিয়৷ পূৰ্ব্বের সকল আঘাত ভুলিয়া গেলেন। দ্বিপ্রহরে ইন্দুভূষণের কাছ হইতে বোঝা পড়া চুকাইয় তাহাকে যথাসম্ভব প্রসন্ন মুখে বিদায় গ্রহণ করিতে দেখিয়া ঈষৎ লঘু চিত্তে ৰিন্ধ্যবাসিনীকে ডাকাইয়া বলিলেন “ইন্দু ছেলেটির জন্ত মনটা খারাপ হয়ে গ্যালো, বড় চমৎকার ছেলেটি। যাহোক যা হবার নয় তার জষ্ঠ আপশোষ বৃথা, তা আমি তাকে একেবারে ছেড়ে দেবেন ; তার সকল সাহায্যের ভার নেবো। এখন তুমি কি বলে ৰিন্ধ্য ? গেীরীর বিবাহ বন্ধ হবে—ন, এই সময় দিয়ে ফেলাই যাবে ?” বিন্ধ্যবাসিনী একথাটা বার বার ভাবিয়াছিলেন তাই চট করিয়া বলিলেন "এখনি বর কোথায় পাবেন ?” নন্দকিশোর কহিলেন “তা ঠিকই আছে, তোমায় একটি কাজ করতে হবে, সত্যর মাকে একখানি চিঠি লিখে সব কথা জানাও, ও র্তাদের মত জিজ্ঞাসা কর, এই দিনেই বিয়ে হলে বাইরে অতটা গোল হবে না, আর দিতেই তো হবে একদিন।” বিন্ধ্যর মনেও এই ইচ্ছাটা একবার উকি মারিয়াছিল কিন্তু তিনি ইহাকে আমল দিতে সাহসী হন