পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা আর বড়বধু ছেলে কাখে করিয়া পাড়ার প্রতি গৃহে গৃহে ঘুরিয়া ছোট কৰ্ত্তার অপূৰ্ব্ব-কীৰ্ত্তি দেশরাষ্ট্র করিয়া মনের বিষ মিটাইতে লাগিলেন। শেষে যোগ করিলেন, “কেমন এখন মুখে চুণকালি পড়েচে তো? ভাই বলতে ঠাকুর একবারে দিশেহাব হন যে ! মনে করেন কুঁছলে মাগীরই যত দোষ, ওর লক্ষ্মণ ভাই পাকা ফলটি ধরেই থাকেন, মুখে ছোয়ান না। দর্পহারী মধুসুদন কেমন দর্পচূর্ণ করেচেন ? ভাই কত বড় ভাল এখন দেখুক ।” ংবাদটা বিনামেঘে বজ্রপাতের মতই গাজুলীপরিবারের উপর পড়িয়াছিল। করুণাময়ী এ দুৰ্দ্দৈবে এককালে স্তম্ভিত হইলেন, শিবনারায়ণ মৰ্ম্মের মাঝখানে একেবারেই যেন মরিয়া গিয়াছিলেন । এ কি হইল । সহস্রবার তাহার মন নীরববিস্ময়ে তাহাকে প্রশ্ন করিল কাহার দোষে এরূপ হইল ! নিজেকে মনীশের প্রতি কমলার প্রতি অবিচারী বোধ করিয়া আত্মধিকারে তাহার চিত্ত পীড়িত হইয়া উঠিল । কেন তিনি করালীচরণের উপর রাগ করিয়া কমলাকে ছাড়িয়া দিলেন । মনীশ যদি ভাবে—যদি সে পলকের জন্তেও মনে করে কাকার টাকাটাই বড় হইল ? সাপে ছুচ ধরার যে উপমাট চিরদিন চলিয়া আসিতেছে এপরিবারের অবস্থা এখন ঠিক সেইরূপ হইয়া উঠিয়াছিল। এত বড় একটা কাণ্ড ঘটিয়া গেল, কিন্তু মনের মধ্যেই সবটা চাপা থাকিল, ওগরাইবার, ফোকুরাইবার সাধ্য যেন কাহারও ছিল না। এই অভূতপূৰ্ব্ব-অদ্ভূত নাটকের নায়ক এপরিবারের ইষ্টগুরু সাৰ্ব্বভৌমমহাশয়ের আত্মজ! বাগদত্তা 为@@ তাই চাকদার প্রতি গৃহে যে সময় সেই ঋষিসন্তানের উদ্দেশ্রে কুৎসামানি । বিদ্ধপ অভিশম্পাত বর্ষণ চলিতেছিল, এ গৃহের মধ্যে ঝটিকাপুর্বের স্তন্ধ সমুদ্রের মত একটা ভীতিপঞ্চারী স্তব্ধতা বিরাজ করিতেছিল । সত্য শুদ্ধ এ অপ্রত্যাশিত ব্যাপারে নিৰ্ব্বাক্‌ হইয়া গিয়াছে । যেদিন নন্দকিশোর কন্যার বিবাহের উমেদারী লইয়া গাঙ্গুণী গৃহে আগমন করিলেন সেদিন সদ্যবর্ষণের সজীবতায় দেশটা যেন তাজ হইয়া উঠিয়াছিল। মেঘযুক্ত আকাশখানা অনন্তের বিশাল বক্ষবৎ প্রতীয়মান হইতেছিল, ফুল বাগানের জলধৌত শোভা দেখিয়া মনে হইতেছিল কে যেন এখনই রং ফলাইরা ইহা চিত্রিত করিয়া গেল, সার্সির উপর মুক্ত বিন্দুর মত বারিবিন্দু শোভমান, আম বাগানের ছায়াস্নিগ্ধ মেহরাশি মাখিয়া বাতাস সজল শীতল ভাবে ঘরের মধ্যে ঘুরিয়া ফিরিতেছিল, এবং সেই চির পরিচিত গৃহে শাদা আস্তরণ বিছান টেবিলটির নিকট নিজের কেদাবাখানি দখল করিয়া পুৰ্ব্বের মতনই মনীশ প্রতিপূর্ণ কৌতুহলে সেই ধেীতধুলি গৃহোস্থানের দিকে চাহিয়াছিল। আজ ইহার প্রতি ধূসর কাগুটি হইতে গাঢ় সবুজ পত্ররাজি পৰ্য্যস্ত যেন একটি নয়নলোভন সৌন্দৰ্য্য ধারণ করিয়া রহিয়াছে, সারি সারি জুয়ের গাছের আপ্রাস্ত আধফোট খেত মুকুলে খচিত, ভক্তহৃদয়ের রক্তরাগে রাঙ্গাজবা বিশ্বলক্ষ্মীর পদতলে আত্মনিবেদন করিয়াছিল। মনীশ সেইদিকে চাহিতেই একটা অতি মুন্দর