পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>●之● দুৰ্ব্বোধ্য নহে । গ্রন্থকার লিথিয়াছেন, “স্ত্রীশিক্ষা ভিন্ন সমাজের সবর্ণাঙ্গীন উন্নতি অসম্ভব ।" সে বিষয়ে বাঙ্গালার শিক্ষিত সমাজের মতদ্বৈধ না থাকিলেও স্ত্রীশিক্ষার যে আশানুরূপ প্রচলন এখনও হয় নাই, ইহা অল্প পরিতাপের বিষয় নহে। ‘কস্ত ও পুত্রকে একই ভাবে শিক্ষা দিবে ইহাই শাস্ত্র-বচন । শিক্ষা মনের সঙ্কীর্ণন্ত নাশ করে এবং এই শিক্ষার সেরূপ সুব্যবস্থা নাই বলিয়াই বহ গৃহ অশান্তি-কলহে উৎসন্ন যাইতেছে, সন্তানেরও সুশিক্ষা ঘটিয়া উঠিতেছে না। কারণ নারীই গৃহের সম্রাঙ্গী-নারীর প্রভাব অল্প নহে । স্বমত ন হইলে হুপুত্রের আশা স্বপূর-পরাহত। সেই মাতাকে গড়িয়া তুলিতে হইলে কস্তার স্বশিঙ্গার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিতে হইবে । এই শিক্ষা আবার সর্বাঙ্গীন হওয়া আবখ্যক । এ গ্রন্থে সেই সৰ্ব্বাঙ্গীন শিক্ষারই আলোচন৷ করা হইয়াছে। গৃহধৰ্ম্মের আলোচনা-বিষয়ে এমন সুন্দর বার-একখানি বাঙ্গল” গ্রন্থ দেখিয়াছি বলিয়া আমাদের মনে পড়ে না। গ্রন্থখানি প্রত্যেক বাঙ্গালী-গৃহে স্থান পাইবার যোগ্য। বানান-সমস্যা – শ্ৰীযুক্ত ললিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্যারত্ব এম এ প্রণীত । কলিকতা কলেজ প্রেসে মুদ্রিত। বঙ্গবাসী কলেজ-স্কল বুক্‌ষ্টল হইতে প্রকাশিত। মূল্য তিন আনা । গ্রন্থকার পুস্তিকার প্রারম্ভেই লিখিয়াছেন, “আজকাল বাঙ্গল ভাষার চর্চ একটা বিষম কাগু হইয় পড়িয়ছে । আইনের ভয় ত আছেই, তাহার উপর আবার ঘরের বিভীষণদের তাড়, গগুস্তোপরি পিওঁ ৷” তাই তিনি বাঙ্গলা ভাষায় বানান সমস্তার আলোচনা করিয়াছেন। বহু প্রচলিত অশুদ্ধ-বানান-পদের তালিকা দিয়া ভুলটা কোথা দিয়৷ প্রবেশ করিল, তাহাও তিনি নির্দেশ করিতে ছাড়েন নাই। তবে তিনি সমস্তার সমাধান করেন নাই । অত্যন্ত বিনয়ের সহিত, আপনার স্বভাবসিদ্ধ সরস ভাষায় কৌতুক-রসে স্নিগ্ধ করিয়া, সকল দিক বচাইয়া, সকল পক্ষকে খুসি রাখিয়া' বাণান-সমস্তার কথা-মাত্র তুলিয়াছেন, এবং ‘বিশেষজ্ঞগণের উপদেশ ও পরামর্শ চাহিয়ছেন। এ বিষয়ে সম্যক আলোচনা একান্ত বাঞ্ছনীয় । ভুল বাশানের সমর্থন কিছুতেই করা যায় না। যাহার ভারতী . লেখকের পৌষ, ১৩২০ বাঙ্গীলা ভাষার চর্চা করেন, তাহাবা ইহার এক খণ্ড করিয়া কাছে রাখিলে যে বই উদ্ভট ও হাস্তকর বাণানভুলের হীত হইতে নিস্কৃতি লাভ করিবেন, এ কথা আমরা নিঃসংশয়ে বলিতে পারি । অনুপ্রাস – শ্ৰীযুক্ত ললিতকুমার বন্দোপাধ্যায় বিদ্যারত্ব, এম, এ প্রণীত। কলিকাতা, ভট্টাচাৰ্য্য এও সন্সের পুস্তকালয় হইতে প্রকাশিত। স্বর্ণ প্রেসে মুদ্রিত । মুল্য আট আনা। বাঙ্গালীয় ধৰ্ম্ম-কৰ্ম্মে, সাহিত্যে, নর-নারীর নাম-নিৰ্ব্বাচনে প্রবাদ-বাক্য-প্রবচনে অনুপ্রাসের ঘোর ঘট প্রদর্শন-কল্পে গ্ৰন্থখানি লিখিত । গ্রন্থকার নিজেই ভূমিকায় লিখিয়াছেন, “অনুপ্রাসের তরফে ওকালতি করিবার জন্য প্রবন্ধগুলি লিখিত হয় নাই। ভাষাতত্ত্বের একটি কৌতুকাবহ রহস্ত প্রদর্শন করই” উlহার প্রকৃত উদ্বেষ্ঠ । এই প্রসঙ্গে তিনি ঠিকই বলিয়াছেন, “পরিমিত প্রয়োগে অনুপ্রাস রচনার সৌন্দৰ্য সাধন করে, ভুরি পরিমাণে প্রযুক্ত হইলে কর্ণ পাড়া উৎপাদন করে। জোর-জবরদস্তি করিয়া, কষ্টকল্পনা করিয়া অনুপ্রাসের অজস্র হুষ্টি করিতে গেলে হিতে বিপরীত হইয় পড়ে !” গ্রন্থকারের আশঙ্কা-সত্ত্বেও এই গ্ৰন্থখানি আমরা একটানে পড়িয়া শেষ করিয়াছি, অথচ কোথায়ও এতটুকু ক্লান্তি বা বিরক্তি ধরে নাই। সরস ভাষায়, সরল বর্ণনা-ভঙ্গিমায় ও ংগ্রহের বিপুলতায় অজস্র হস্তধারা মণিমুক্তার মতই বরিয়া পড়িয়াছে। সানন্দে ও সাগ্রহে আমরা তাহ দুই হাতে করিয়া কুড়াইয়াছি। গ্ৰন্থখানি যেন বঙ্গ সহিত্যের এক অজান লোকের চাবি খুলিয়৷ দিয়াছে। একাধারে তথ্য ও হাসির ভাণ্ডার মুক্ত করিয়াছে। এ গ্রন্থ ভাষার সম্পদ-স্বরূপ । ছাপা কাগজ সুন্দর। গ্রন্থের মুখপত্রে ত্রিবর্ণে রঞ্জিত হুরপাৰ্ব্বতীর একখান চিত্র প্রদত্ত হইয়াছে। উপমমু্য।—শ্ৰীযুক্ত বিনয়ভূষণ সরকার প্রণীত। মূল্য দুই আনা । মহাভারতোক্ত উপমমুর কাহিনী অবলম্বনে রচিত। এখানি ক্ষুদ্র একটি নাটিকা । বালক-বালিকাগণের অভিনয়োপযোগী করিয়াই রচিত । রচনায় মধ্যে মধ্যে কবিত্বের পরিচয় পাই ; কিন্তু ভাষা সৰ্ব্বত্র একই ধারায় বহিয়া চলে নাই,—কোথাও বেশ