পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৫২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩এশ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা লোকটির অবর্তমানে তালা চাবি ভাঙ্গিয়া প্রতিমাগুলি এক কোণে সরাইয়া স্বচ্ছন্দে ঘর দখল করিয়া লইলেন । এখানে কিন্তু র্তাহারা অধিক দিন রাজত্ব করেন নাই, গিরগামের এক অপেক্ষাকৃত উৎকৃষ্ট গৃহে শীঘ্র উঠিয়া যান। প্রতি সপ্তাহে একদিন সন্ধ্যার সময় অধিবেশন হইত। ঈশ্বর প্রার্থনার পর কৰ্ম্মারম্ভ, এই যা ধৰ্ম্মের সহিত র্তাহাদের সম্পর্ক। আবে সকল বিষয়ে সভার উদ্দেশ্য সামাজিক । কোন ব্যক্তি সভ্যপদে দীক্ষিত হইবার পূৰ্ব্বে র্তাহাব প্রতিজ্ঞ করিতে হইত যে তিনি জাতিভেদ স্বীকার করেন না, পরে পাউরুটির টুকরা মুখে করিয়া আপনার অকৃত্রিম বিশ্বাসের পরিচয় দিতে হুইত, তদনন্তর সভার রেজিষ্টরে নাম স্বাক্ষর করিয়া সভ্য শ্রেণীর মধ্যে গণ্য হইতেন । প্রথম কয়েক বৎসর মুসলমানের হাতে জলগ্ৰহণ করিবারওঁ বিধান ছিল। দাদোবা - পাণ্ডুরঙ বালকৃষ্ণ এইরূপ কতকগুলি লোকের যত্ন ও উৎসাহে ক্রমে সভ্যদল বৃদ্ধি হইতে লাগিল । পুণ আহমদ নগর, খানদেশ, বেলগাম প্রভৃতি মফস্বলের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে পরমহংস সভার শাখা প্রশাখা বিস্তৃত হইল। সভ্য সংখ্যা কত ঠিক নির্ণয় করা অসাধ্য তথাপি সভার শ্ৰীবৃদ্ধি কালে অনুন ৫০০ আন্দাজ বলা যাইতে পারে । এই সভা প্রায় বিশ বৎসর কাল জীবিত ছিল । যদিও ইহার সাপ্তাহিক অধিবেশনে গোপনে কাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহ হইত তথাপি সময়ে সময়ে সভ্যদের উৎসাহ উথলিয়া উঠিয়া নির্দিষ্ট সীমা উল্লঙ্ঘন করিতে দেখা গিয়াছে। আমার বোম্বাই প্রবাস ১২৭৭ একবার তাহাদের মধ্যে জন কতক যুবক কেল্লার এক রুটিওয়ালার দোকানে পাউরুটি কিনিয়া সেই রুটি হস্তে প্রকাগু রাজপথ দিয়া তাহাদের গৃহদ্বারে চলিয়া আসেন। র্তাহাদের সাপ্তাহিক অধিবেশনে দীক্ষা ও তর্ক বিতর্ক ভিন্ন আর বিশেষ কোন অনুষ্ঠান হইত না । কেবল বার্ষিক প্রতিভোজন এই সভার এক বিশেষ অনুষ্ঠান ছিল । সেই সময়ে মফস্বলের ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশ হইতে পরমহংসদল সমবেত হইয়া জাতি নিৰ্ব্বিশেষে একত্রে পান ভোজন করিতেন । কিন্তু এইরূপে অধিক দিন যায় নাই— পরমহংসমণ্ডলীর শীঘ্রই সুখস্বপ্ন ভঙ্গ হইল । তাহারা বুঝিতে পারিলেন ষে হিন্দুধর্থ ও জাতিভেদের উচ্ছেদ সাধন সহজ নহে। এক সামান্ত ঘটনা হইতে এই বালির বাধ ভাঙ্গিয়া গেল । কোন এক ব্যক্তি ( খুব সস্তব সভ্যদের মধ্যে একজন ) সভার থান্ত পত্র হরণ করিয়া লইয়া যায়। তাহাতে সভার যত গুহ কথt—সভ্যদের নাম ধাম, তাহদের জাতিভেদের প্রতিজ্ঞ যাহা কিছু ভিতরকার কথা সকলি বাহির হইয়া পড়িল । হিন্দু সমাজে মহা গণ্ডগোল বাধিয়া গেল । যতদিন পর্য্যন্ত সভার গোপনীয় কথাসকল প্রকাশ হয় নাই ততদিন হিন্দুসমাজ সন্দেহ করিয়াও তাহাদের কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতে সমর্থ श्झ নাই। গুপ্তকথা সকল ফাল হইয়া সকলের চিত্তে ভয়ের সঞ্চার করিয়া দিলণ, হিন্দু সমাজের কাছে তাহারা-বমাল ধরা পড়িলেন । ' তাহারা ভয়ে একে একে সরিয়া পড়িলেন— পলাতকদের দৃষ্টাস্তে যথার্থ বীরের হৃদয়ও