পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৬০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমালোচনা অজন্তা—শ্ৰীযুক্ত অসিতকুমাব হালদার প্রণীত । ভট্টাচাৰ্য্য এণ্ড সনস্ কর্তৃক প্রকাশিত । কলিকাতা স্বর্ণ প্রেসে মুদ্রিত। মূল্য এক টাকা মাত্র। প্রসিদ্ধ চিত্র-শিল্পী শ্ৰীযুক্ত অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সি, আই, ই মহাশয় এই গ্রন্থের মুখবন্ধে যে ভূমিকাটি লিখিয়৷ দিয়াছেন, তাহ উদ্ধত করিবার প্রলোভন সম্বরণ করিতে পরিলাম না । তিনি বলিয়াছেন, “ভারত চিত্র-শিল্পের শেষ দীপাবলী যেখানে আজও বিচিত্র ছটা বিস্তার করিতেছে—বৌদ্ধ যুগের সেই অজস্তু গিরি-গুহয় অীর বৈদ্যুতিক আলোকপ্রখর এই নব্য বাঙ্গালয় ব্যবধান বিস্তর—পথের ব্যবধান কালেব ব্যবধান, সভ্যতা ভব্যতা উভয়েরই ব্যবধান ; সুতরাং অজস্তার চিত্র-শিল্পের সঙ্গে আমাদের সম্পূর্ণ পরিচয় ঘটাইতে হইলে শুধু শুনিয়া নয় সেটা দেখিয় বোঝাও প্রয়োজন এবং এই উদ্দেশ্বেই শ্ৰীমন নন্দলাল ও অসিতকুমাব প্রমুখ বাঙ্গালার তরুণ শিল্পিগণ অজস্থার তীর্থমুখে যাত্র করিয়াছিলেন । এই ক্ষুদ্র পুস্তিক সেই তীর্থ যাত্রীরই ইতিহাস । এই ইতিহাস পাঠ করিতে করিতে হয় ত প্রাচীন ভারতের লিপূর্বাপিত প্রায় সেই প্রদীপের দিকে আমাদের দৃষ্টি পড়িবে—যে প্রদীপের শিখা স্নিগ্ধ উজ্জ্বল প্রশস্তি এবং যাহার আলোক বিদ্যুতের মত তীব্ৰও নয় নয়নের পীড়াও দেয় না।" এই পুস্তকখানি পাঠ করিয়া আমরা পরম পরিতৃপ্তি লাভ করিয়াছি । লেখকের অনড়ম্বর স্বচ্ছ সরল ভাষা মুক্ত প্রবাহে বহিয়া গিয়াছে, সেই প্রবাহে আমরাও যেন আমাদিগের মনের তরীখানি ভাসাইয়া চলিয়ছি । সে তরী কোথাও আবর্তে না পড়িয়া, অস্পষ্টতর জঙ্গলে বtধ ন পাইয়। বজ্রনাদী উচ্ছ,সের পাহাড়ে ঘা না খাইয়া দিব্য লঘু গতিতেই ছুটয় চলিয়া এক অপরূপ সৌন্দৰ্য্যমন্দিরের তীরে আসিয়া পোছিয়াছে । অজানা স্বপ্নলোকের মাধুরী-দুখে মন একেবারে মুগ্ধ হইয়া যায়। গ্রন্থকার বহু স্থানেই ভাষাকে যেন কথা কহাইয়াছেন—গ্রন্থের বহু ছত্রে ভাবের ফুল বিচিত্র বর্ণে ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। বর্ণনার ভঙ্গীটিতে এতটুকু মুরুবিয়ান বা পাণ্ডিত্যের হুঙ্কার নাই ; তাহা আগাগোড়া শান্ত সংযত শ্ৰীতে সমুজ্জল। চিত্রশিল্পকলায় প্রন্থকারের প্রতিভা বসন্তের ফুলের মতই সুন্দরভাবে বিকশিত হইতেছে ; রচনা-কাৰ্য্যেও প্তাহীর প্রতিভাব পরিচয় গ্রন্থখানির সর্বত্রই ফুটিয়া উঠিযাছে ! গ্রন্থকারের ভাষা প্রকৃতই আর্টিষ্ট্রেয় ভাষা, কবির ভাষা-ভাবুকের ভাষা । সে ভাষার মধ্য দিয়া একথানি নিম্ভীক, দৃঢ় ও শক্তি নির্ভর চিত্তের আভাস পাইতে বিলম্ব ঘটে না । গ্রন্থ কারের শক্তির বিশেষত্বের কথা ইঙ্গিতে বলিলাম গ্রন্থের মধ্যে কি আছে পাঠক তাহার পরিচয় গ্রহণ করুন। সংক্ষেপে আমরা এইটুকু শুধু বলিয়া দিতেছি যে এই গ্রন্থ চিত্র-সাহিত্য-বিভাগে অমূল্য সামগ্ৰী । ইহা একাধারে প্রাচ্য কলচিত্রের ব্যাথ্যা-পুস্তক ও সুললিত ভ্রমণ-কাহিনী এবং ভারতের গৌরবময় অতীতের এক কান্ত্রির ইতিহাস । উপন্যাস অপেক্ষ এ গ্রন্থ অধিক চিত্তাকর্ষক। দর্শনীয় যtহী কিছু সে সমস্তই বইয়ের পাতায় ছাপার অক্ষরে লেখা বলিয়া মনে হয় ন—মনে হয়, যেন চোখের সম্মুখে সে সমস্ত বিচিত্র বর্ণরাগে ফুটিয়া উঠিয়াছে । গ্রন্থের ছাপা কাগজ বাধাই প্রভৃতি উংকৃষ্ট। গ্রন্থে অজন্ত গুহায় খোদিত উৎকৃষ্ট চিত্রের প্রতিলিপি প্রদত্ত হইয়াছে তন্মধ্যে একথানি ত্রিবর্ণে রঞ্জিত। যাহার প্রাচ্য চিত্রকলা সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করিতে চাহেন, প্রাচ্য চিত্রকলার বিশেষত্ব নির্ণয় জানিতে চাহেন, তাহার এই গ্রন্থ পাঠ করিলে যে উপকৃত হইবেন, সে বিষয়ে এতটুকু সন্দেহ न|३ ! পরাগ—শ্ৰীযুক্ত গঙ্গাচরণ দাশ গুপ্ত, বি, এ, প্রণীত । কলিকতা ১৩২০ এথানি কবিতা-গ্রন্থ । মাসিক-পত্রের পাঠকের নিকট স্বকবি গঙ্গাচরণ বাবুর নাম অপরিচিত নহে। এই গ্রস্থে ৪১টি থও কবিতা সংগৃহীত হইয়াছে। কবিতাগুলি ভাব গৰ্ত্তীর, ভাষায় বলময়ী প্রকৃতির বেশ ছাপ পড়িয়ছে। কবির বীণায় বহু স্থলে উচ্চ স্বরই ধ্বনিয়া উঠিয়াছে,