পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২১.djvu/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮৭ বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা বিপিন কোনো দিকে ক্রক্ষেপ না করিয়া কণী তারাকে একেবারে নিজের শয়নকক্ষে লইয়া গেল। তখন ক্রমশ বাড়ীর সকলে একে একে আসিয়া দ্বারপ্রাস্তে ভিড় করিতে লাগিল। বিলিন দেরাজ খুলিয়া একটা এনামেলের "গামী, স্পঞ্জ, তোয়ালে বাহির করিল ! তারপর ষ্ট্রোভ জালিয়া নিজেই একটা কেটলি হাতে করিয়া জল আনিতে বাহির হইল-সে সকলের প্রতি এমন বিরক্ত হইয়াছিল যে কাহাকেও কোনে সাহায্য করিতে বলিতে তাহার প্রবৃত্তি হইতেছিল না। তাহাকে কেটলি হাতে করিয়া যাইতে দেখিয়া নিধিরাম কেটলি কাড়িয়া লইয়া জল আনিয়া গরম করিতে দিল । বিপিন নিধিরামকে বলিল—নিধিদ, তোর দেখছি আমার ওপর একটু দয়া আছে ... জল খানিকটা গরম করে এই গামলায় দে, আর খানিকটে চা করে ফেল। আর খানিকটে দুধ গরমু কর, ” বাড়ীতে দুধ ন দেয় কাউকে পাঠিয়ে দে গোয়াল-স্বাড়ী থেকে শিগগির কিনে আনবে,... বাড়ীর দুধ দেবে নাই বা কেন, না দেয় আমি জোর করে নেব । বিপিনের অভিমানী অথচ একগুঁয়ে তেজস্বী মন একবার অভিমানে সকলকে ত্যাগ করিয়া স্বতন্ত্র ভাবে কাজ করিবার জন্ত উৎসুক হইতেছিল, আবার পরক্ষণেই সকলকে দমন করিয়া নিজে জয়ী হইবার জন্ত উদ্যত হইয়া উঠিতেছিল। বিপিন দ্বারের দিকে চাহিয়া দেখিল ক্ষম, মোক্ষদা, জন্ম, পাচুর মা, প্রভৃতি সকলে ঘরের স্রোতের ফুল %oზ•& মধ্যে উকি মারিবার জন্ত পরস্পরকে ঠেলাঠেলি করিতেছে অথচ বিপিনের ভয়ে অগ্রসর হইতে পারিতেছে না । বিপিন তীব্র কণ্ঠে বলিল—ক্ষমা, উটের মতন গল বাড়িয়ে কি উকিঝুকি মারছিল । অত কৌতুহল হয়ে থাকে ঘরের মধ্যে আয়, এসে সেবা কর ... মোক্ষদা, যা খানিকটে छ्थ গরম করে চট করে निरग्न ठाॉग्न । মোক্ষদা সেখান হইতে পলায়ন করিবার সুবিধা পাইয়া তৎক্ষণাৎ পলায়ন করিল। কিন্তু আর সকলে ন পারিতেছিল পলায়ন করিতে, আর না পারিতেছিল বিপিনের আহবান স্বীকার করিতে ; তাহার বিবর্ণ মুখে হতবুদ্ধি হইয়া দাড়াইয়াই রছিল। নিধিরাম গরম জল গামলায় ঢালিয়া দিল । তখন বিপিন বলিল—একে পরিষ্কার করব কি আমরা পুরুষেরাই ? স্ত্রীলোকের লজ্জা এতগুলি স্ত্রীলোক তোমরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখবে ? সকলে আড়ষ্ট । কেহ একটু নড়িলও না । তখন সকলের পশ্চাৎ হইতে মালতী অগ্রসর হইয়া আসিয়া বিপিনকে বলিল— আপনার বাইরে যান, আমি সব করছি । বিপিন সপ্রশংস স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে মালতীয় মুখের দিকে চাহিল, দেখিল এই বিষম বিক্ষেপের মধ্যেও তাহার মুখ স্থির গম্ভীর, সে প্রবীণর মতো আত্মস্থ । বিপিন তাড়াতাড়ি ট্রাঙ্ক খুলিয়া নিজের নূতন পুরাতন কতকগুলা কাপড় বাহির করিয়া ফ্যাশ ফ্যাশ করিয়া ছিড়িয়া একটা ব্যাণ্ডেজ তৈরি করিল । কঁচি, ফেটি পিন, স্বচস্থত, সাবান, প্রভৃতি গুছাইয়া দিয়া সে নিধি