পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミやり পৌছিলাম। আয়োজনের ক্রটি ছিল না। বরযাত্রীদিগের রাত্রিবাসের জন্ত - তাহারা সম্মুখের একটি বাড়ী ঠিক করিয়া রাখিয়াছিলেন। নৃত্যগীতেরও ব্যবস্থা ছিল— বৃষ্টিতে আসর তেমন জমিতে পারিল না। আহারাদি শেষ করিয়া বিশ্রাম-বাটিতে গেলাম। বৃষ্টি থামিয়া গিয়াছিল। মাঝে-মাঝে মেঘের গর্জন ও বিদ্যুতের চমক উৎসবানন্দের পরিবর্তে বিভীষিকার সঞ্চার করিতেছিল। অামাদিগের অপরিচিত একটি যুবক,–বোধ হয়, কণ্ঠাপক্ষীয়,—বলিয়া উঠিল, “কি দুৰ্য্যোগ ! ভূতপ্রেতেই এ দুৰ্য্যোগে শুধু বাহির হয় মানুষে পারে না ! নিমন্ত্রণের জন্ত ও না ।” হল ঘরের কোণে বসিয়া একটি ভদ্র লোক তামাকু সেবন করিতেছিলেন—দড়ী, গোফে র্তার মুখটাকে একেবারে ঢাকিয়া রাখিয়৷ ছিল। মাথায় প্রকাও চুল-অর্থাৎ দেখিলে তাহাকে থিয়সফিষ্ট কিম্বা কোন সম্প্রদায় বিশেষের লোক বলিয়া মনে হয়। তার নামটা, বুঝি, রতনবাবু,—পরিচয়ে জানিয়া ছিলাম—রতন বাবু বলিলেন, “বলেন কি মশায়—! ভূতগুলার কি কাওঙ্কান নাই যে,এই দুৰ্য্যোগে মরিবার জন্ত বাহির হইবে।” কক্ষমধ্যে হাস্তের তরঙ্গ উঠিল ! আমি কহিলাম, "ভূতেরও মরিবার ভয় আছে নাকি ?” রতন বাবু বললেন, “তারা এ দুৰ্য্যোগে বাহির হয় না—জ্যোৎস্নারাত্রিটারই তারা পক্ষপাতী !” অপরিচিত যুবকটি কষ্টিলেন, “আপনার সঙ্গে তাদের কথাবার্তা হয়েছিল, বুঝি ?” রতনবাবু কহিলেন, “নিশ্চয়- " ভারতী । আষাঢ়, ১৩১৭ অপরিচিত যুবকটি কহিলেন, “ভূত। যার অস্তিত্বই নাই—তাই দেখিয়াছেন! অশ্চির্য্য!” রতনবাবু কহিলেন, “ও বয়সে সবই আশ্চর্য্য বলে মনে হয় ! যদি আপনাকে দেখাইতে পারি— ?” অপরিচিত যুবকটি বাধা দিয়া কহিলেন, “আর, যদি না পারেন ?” “না পারি?” রতনবাবু পকেট হইতে ব্যাগ বাহির করিয়া কহিলেন, “আমার নিকট নোটে-টীকায় আটচল্লিশ টাকা আছে, আমি এগুলি আপনাকে দিব ।” আমাদের দলের মধ্য হইতে একজন বলিয়া উঠিল, “রীতিমত বাজি !” অপরিচিত যুবকটি হাসিয়া কছিল, “আমার কাছে অত কিছু নাই—আসিয়াছি, বিবাহের নিমন্ত্রণে —সঙ্গে তিন-চারিটি টাকা ত মোটে আছে।” রতনবাবু কহিলেন, “তবে আর মিছা বাজি রাখিয়া কি হইবে ?” হোষ্টেলের দল মাতিয়া উঠিল। আমরা কহিলাম, “দেখান ভূত—আমরা চাদা দিয়া বাজি রাখিব !” রতনবাবু হু কী নামাইয়া, হাসিয়া কছিলেন, “যখন বাজিরি কথাই হল, তখন টীকা বাহির করুন ! তা ছাড়া, তর্কট ওঁর সঙ্গেই হচ্ছে, যখন—” “বেশ !” বলিয়। সকলে পকেট হইতে ব্যাগ বাহির করিলাম। চাঁদায় পঞ্চাশ টাকা উঠিল। অপরিচিত যুবকের হাতে দিয়া কহিলাম,“রাখুন মশায়,টাকা,আপনিই রাখুন! যদি উনি ভূত দেখাইতে পারেন ত, সব উনি লইবেন, আর যদি না পারেন ত, উহার আটচল্লিশ টাকা আমরা ভাগ করিয়া লইব ।”