পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ○8 মনে করিয়া সে চেষ্টায় নিবৃত্ত হন। দীর্ঘকাল পরে শ্ৰীযুক্ত অসওয়েল সাহেব উহার আদ্যন্ত সুন্দর অনুবাদ করিয়া বিশেষ প্রশংসা ভাজন হইয়াছেন। আমি আলালের ঘরের দুলাল সম্বন্ধে অনেক কথা বলিলাম, কারণ এই যে, এই পুস্তক খানিই ঘটনা বৈচিত্র্যে ও ভাষার অভিনব ভঙ্গিমা ও মাধুরীতে গ্রন্থকৰ্ত্তার সর্ব প্রধান পুস্তক,—উহাই প্রকৃত প্রস্তাবে বঙ্গসাহিত্যের বিকাশ ও উন্নতির পথে নুতন যুগ আনিয়া গ্রন্থকর্তার মস্তকে চিরস্থায়ী যশের মুকুট পরাইয়া দিতে সমর্থ झद्देब्रttछु ! আলালের ঘরের দুলাল শেষ হইলে প্যারীচাঁদ ক্রমান্বয়ে নিম্নলিথিত পুস্তকগুলি প্রণয়ন করেন :–১ মদখাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়, ২ রামারঞ্জিকা, ৩ কৃষিপাঠ ৪ গীতাঙ্কুর, ৫ যৎকিঞ্চিৎ, ৬ অভেদী, ৭ এতদেশীয় স্ত্রীলোকদিগের পূর্বাবস্থা, ৮ ডেডিড হেয়ারের জীবনচরিত, ৯ আধ্যাত্মিক, ১• বামাতোষিণী । এই সকল গ্রন্থের মধ্যে কতকগুলি শ্লেষাত্মক ও হাস্ত পরিহাস পূর্ণ হইলেও বিশেষ শিক্ষাপ্রদ। কি সামাজিক কি ধৰ্ম্মনৈতিক যে বিষয়ে তিনি যখন যে পুস্তক রচনা করিয়াছেন তাহাতেই তিনি লোক-চরিত্র, সামাজিক রীতিনীতি, দেশীয় আচার ব্যবহার ও সনাতন উদার ধৰ্ম্মনীতি সম্বন্ধীয় গভীর জ্ঞান ও সহৃদয়তার যথেষ্ট পরিচয় দান করিয়াছেন। ১৮৮৩ খৃঃ অব্দে মহাত্ম প্যারীচাঁদের স্বৰ্গারোহণের কিছুকাল পরে তৎপ্রণীত গ্রন্থের অনেকগুলি বিলুপ্তপ্রায় হইবার উপক্রম করিয়াছিল। বিগত ১২৯৯ সালে মহাত্মা ভারতী । ভাদ্র, ১৩১৭ প্যারীচাদের পুত্ৰগণের উৎসাহে ক্যানিং লাইব্রেরীর অধ্যক্ষ শ্ৰীযুক্ত যোগেন্দ্রচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় স্বৰ্গীয় মহাত্মার গ্রন্থাবলী “লুপ্ত রত্নোদ্ধার নামে” পুনমূদ্রিত ও প্রকাশিত করিয়া বাঙ্গালা সাহিত্যাকুরাগী ব্যক্তিগণের বিশেষ উপকার করিয়াছেন । বর্তমান কালের বঙ্গসাহিত্যের অসাধারণ উন্নতি বিধাতা বঙ্গভূমির অদ্ভূত প্রতিভাশালী স্বসন্তান,মহাত্মা বঙ্কিমচন্দ্র উক্ত “লুপ্তরত্নোদ্ধার” গ্রন্থের যে মুন্দর ভূমিকা লিখিয়াছিলেন, তাহ পাঠ করিলে বঙ্গসাহিত্যে মহাত্মা প্যারীচাদের স্থান যে কত উচ্চ এবং উক্ত সাহিত্য র্তাহার নিকট যে কি পরিমাণে ঋণী তাহা সম্যকৃরূপে বুঝিতে পারা যাইবে । “বাঙ্গল সাহিত্যে প্যারীচাঁদ মিত্রের স্থান অতি উচ্চ । তিনি বাঙ্গালী সাহিত্যের ও বাঙ্গালা গদ্যের একজন প্রধান সংস্কারক। অনন্তর তিনি বাঙ্গাল গদ্যের পুর্বাবস্থার পরিচয় দিয়া উহার উৎকর্ষের কাল নির্দেশ ও উহার প্রকৃত উন্নতির অবস্থার সূচনার বিষয় উল্লেখ করিতে অগ্রসর হুইয়। এইরূপ লিখিয়াছেন—"- এই সংস্কুতানুসারিণী ভাষা প্রথম মহাত্মা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও অক্ষয়কুমার দত্তের হাতে কিছু সংস্কার প্রাপ্ত হইল। ইহাদিগের ভাষা সংস্কৃতামুসারিণী হইলেও তত দুৰ্ব্বোধ্যা নহে । বিশেষতঃ বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ভাষা অতি মধুর ও মনোহর । তাহার পূৰ্ব্বে কেহই এরূপ সুমধুর বাঙ্গালা গদ্য লিখিতে পারে নাই, এবং তাহীর পরেও কেহ পরিবে না। কিন্তু তাহা হইলেও সৰ্ব্বজনবোধগম্য ভাষা হইতে ইহা অনেক দুরে রহিল। সকল প্রকার কথা এ ভাষায় ব্যবহৃত হইত না বলিয়৷ ইহাতে সকলপ্রকার ভাব প্রকাশ করা যাইত না, এবং সকল প্রকার রচনা ইহাতে চলিত না । গ:দ্য ভাষার ওজস্বিতা এবং বৈচিত্রের অভাব হইলে ভাষা উন্নতিশালিনী হয় না। কিন্তু প্রাচীন প্রথায় আবদ্ধ এবং বিদ্যাসাগর মহাশয়ের