পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, ষষ্ঠ সংখ্যা । —হঠাৎ দেখিলে দ্বিধায় পড়িতে হয়, যে উহ জীবন্ত কি না । বাস্তবিক, এই বলদ মূৰ্ত্তিটা উৎকল-ভাস্কর্য্যের একটা শ্রেষ্ঠ নিদর্শন । মন্দিরটি এখন জীর্ণ হইয় পড়িয়ছে। স্থানে স্থানে বসিয়া গিয়াছে । জগমোহনে, আলোক প্রবেশের জন্ত যে গবাক্ষগুলি ছিল, তাহাও প্রস্তরাদি দ্বার বন্ধ করিয়া দেওয়া হষ্টয়াছে। ইহার কারণ বিরাট ছাদভারে গবাক্ষ-পাশ্ববৰ্ত্তী স্থান বসিয়া যাইতেছিল। একে ত মন্দিরের ভিতরে আলোক আসিবার সুযোগ এক প্রকার ছিল-ই না, তাহাতে গবাক্ষ গুলি রুদ্ধ হওয়াতে মন্দিরা ভ্যস্তরে অমা-রজনীর অন্ধতামস প্রসারিত হইয়াছে। ভুবনেশ্বরের কারুকার্য্যের পরম-পরিণতি নাটমন্দিরে দেখা যায় ! এক জায়গায় নীল পাথরের উপরে শিল্প সুন্দর ক্ষোদন দেখিয়া আমরা মুগ্ধ ভাবে দাড়াইয়া রহিলাম। কি সে শিল্প ! যেন একটা প্রজাপতির পাখী ! যেন একটা চিত্রিত স্বপ্ন ! আর এক জায়গায় একটি কুঠরির ভিতরে এক বৃহৎ রমণীমূৰ্ত্তি দেখিলাম। মুৰ্বির আপাদ-মস্তক অলঙ্কার জড়িত। আর সে অলঙ্কারের ক্ষোদনশিল্প এমন সুক্ষ যে, তাহা বর্ণনা তীত। মন্দির গাত্রে, সৰ্ব্বত্রই যে সহস্র সহস্ৰ ক্ষুদ্র মূৰ্ত্তি আছে,—তাহাও কি অবহেলার যোগ্য ? দেখিলেই মনে হয়, তাহীদের প্রত্যেকটীর উপরেই শিল্পের কমনীয় সৌন্দৰ্য্যরেখা মুদ্রিত করিয়া দিতে শিল্পিগণ সাধ্যমত যত্বের ক্রট করে নাই ! প্রত্যেক মুৰ্ত্তির মুখেই বিভিন্ন প্রকার ভাবের বিকশিত সৌন্দৰ্য্য। কেহ আলিঙ্গনোস্থ্যত, কেহ হর্ষোৎফুল্ল, কেহ জপমগ্ন। কেহ প্রণয়ভাষণপুলকিত, কেহ ૨ ভুবনেশ্বর। 8●○ রণগমনোদ্যত, এবং কেহ ক্রোধকুটিলনেত্র। এমনি কত বিচিত্র লীলা । নিপুণ কন্মিগণের হাতে অমন যে কঠিন প্রস্তর, তাহাও যেন ফুলের মত কোমল হইয়া উঠিয়াছে। কিন্তু তথাপি সত্যের অমুরোধে বলিতে হয়, উৎকলের ভাস্কৰ্য্যশিল্প তেমন উন্নত নয় । স্থাপত্যে উৎকলের প্রতিদ্বন্দী জগতে নাই । কিন্তু ভাস্কর্য্যের উন্নত আদর্শ, উৎকল-শিল্পীর হাতে পরিণতি লাভ ত, করিতেই পারে নাই, পরস্তু খৰ্ব্বত-লাভ করিয়াছে। হাণ্টার সাহেব বলিয়াছেন যে,— “The warriors form models of manly grace and the ladies frequently exhibit that exquisite type of face which the Gre cian Artists have left behind them alike in Eastern and western India.” Aosts &Sovi ভাস্কর্য্যের যোদ্ধাগণ পুরুষোচিত সৌন্দর্য্যের আদর্শ স্থানীয় এবং গ্রীসদেশীয় শিল্পীর পুর্ব ও পশ্চিম ভারতে পরম রমণীয় মুখের শ্ৰী-সৌন্দর্য্যের ষে দৃষ্টান্ত রাখিয়া গিয়াছেন, রমণী মূৰ্ত্তি সকলে প্রায়ই তাহ। দেখা যায় ।” ৮ বলেন্দ্রনাথও লিখিয়াছেন "ভুবনেশ্বরের দেওয়ালে কতকগুলি উন্নতগ্রীব দীর্ঘাবয়ব নারীমূৰ্ত্তি দেখিলে এমনি যুরোপীয় ছ’চের বোধ হয় এবং কোন কোনটার ভঙ্গী এমনি যুরোপীয় যে, গ্রীক প্রভাব অস্বীকার করিতে বিস্তর চেষ্টার আবশ্ব ক করে । বিশেষতঃ যখন পাৰ্ব্বভীমূৰ্ত্তির সন্নিহিত নিভৃতকোণে কলানিপুণ রমণীগণের মধ্যে সহসা গ্রীসীয় লায়র যন্ত্ৰহস্ত। নারীমূৰ্ত্তি দেখা যায়, তখন চমকিয়া উঠিতে হয়—এT কি গ্রীস ম৷ ভারতবর্ষ।” উৎকল ভাস্কর্য্যে গ্রীসীয় শিল্পের ছায়াপাত লক্ষ্য করা যায়, তাহ অস্বীকার্য্য নয়, কিন্তু গ্রীণীয় ভাস্কৰ্য্যকে অনুকরণ করিয়াও উৎ