পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩২১.djvu/৪৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা নয়—ইল, তাই না ভয় পাই, সাহস করে এগুতে পারি না—পাছে লোকে মনে করে, এই ত লেখা,-বের করাই খৃষ্টতা ! এরও আবার দাম চায় !—আমার ভারি আহলাদ হচ্ছে, ভরসা হচ্ছে, ইল, আবার তোমায় ভাল করে তুলতে পারব।” ইলার নেত্র-পল্লবে যে জলের রেখা দেখা দিয়াছিল, তাহ গোপন করিবার জন্ত সে কথা সে ফিরাইল, কহিল, “পাওনাদাররা এলে বলে, এবার তাদের টাকা তুমি শীগগিরই শুধে দেবে!” রমানাথ কহিল, “ঠিক বলেছ, ইলা ।” দল বাড়ী-চড়াও হইয়া রমানাথকে যখন কঠিন কথার বাণে জর্জরিত 'করিয়া তুলিতেছিল, এবং রমানাথ স্বপক্ষে বলিবার একটি কথাও খুজিয়া না পাইয়া ছল ছল স্নান নেত্ৰে নিৰ্ব্বকভাবে দাড়াইয়াছিল –ইলা তখন কোন মতে দেওয়াল ধরিয়া আসিয়া উপরের দালানে জানালার পাশ্বে দাড়াইয়া সে দৃশু দেখিয়াছিল! নিরুপায় স্বামীর সে বিবর্ণ পাণ্ডু মুখে বেদনার যে কাতরতা ফুটিয়া উঠিয়াছিল, তাহ দেখিয়া ইলার বুক ফাটিয়া যাইতেছিল। তাহার মনে হইতেছিল, কি সে দুর্ভাগিনী স্বামীর কষ্টের এতটুকু লাঘব করিবার সামর্থ তাহার নাই, শুধুই রোগের পশরা লইয়া অনর্থক স্বামীর পায়ে শৃঙ্খল হইয়া সে অঁাটিয়া রহিয়াছে ! তাহার প্রাণ দিলেও যদি পাওনাদারের ঋণ শোধ হয়, তাহ হইলে সেই মুহূর্তেই সে আপনার এই প্রাণথানাকে বলি দিয়া স্বামীকে মুক্তির নিশ্বাস ফেলিবার অবসর দিয়া জুড়াইয় ধাচে! জোতিঃহারা 88సె ইলার বুকে বেদনাটা টনটন্‌ করিয়া উঠিল—মুখে তাহার কোন কথা ফুটিল না। ইগার সে ভাব রমনাথ লক্ষ্য করিল। তাড়াতাড়ি সে কোটের পকেট হইতে একশিশি ঔষধ ও একটি ডালিম বাহির করিল। ইলার চক্ষু বাধা মানিল না— জলে ভরিয়া উঠিল। হতভাগিনী সে । তাহারই জন্ত স্বামীর অর্থ এবং চাকুরী সকলই নষ্ট হইয়া গিয়াছে। স্বামী নিজে পেটে না থাইয়া গায়ের আলোয়ানখানি এমন কি ঘটাবাটিপৰ্যন্ত বিক্রয় করিয়া স্ত্রীর রোগের আজই প্রত্যুষে আসিয়া পাওনাদারের ' ঔষধ-পথ্য ও ডাক্তারের ভিজিট সমানে যোগাইয়া আসিতেছেন। সে কথা তিনি .কোন দিন মুখে আমেন নাই, বটে ! কিন্তু সে ত সব জানে! স্বামীর কোন উপকারেই সে লাগিল না— কেবল র্তাহাকে ঃখ দিবার জন্তই যেন তাহার জন্ম হইয়াছিল! ३ চিরদিন কখনও সমান যায় না, এই প্রবাদ-বাক্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, রমানাথ। তাহার পিতা কৃষ্ণধনের তিনচারিখানি কাপড়ের দোকান, লোহার কারবারসহরে যথেষ্ট নাম। শৈশবের র্তাট ধৎসর পরম মুখে কাটাইয়া রমান্নাথ মূর্তৃিহীন হইল এবং মাসখানেকের মধ্যেই এক অপরিচিত বালিকা গহtয় মাতার শূন্ত স্থান পূর্ণ করিয়া দণ্ডমুণ্ডেরও কত্রীত্ব গ্রহণ করিয়া বসিল । বিমাতার বয়স অল্প ; রমানাথের চেয়ে তিন চারি বংসরের অধিক হইবে না । কিন্তু বুদ্ধি-বিবেচনায় সপত্নী-পুত্রকে সে • অনেক পশ্চাতে রাখিয়া ছিল। বাপ-মায়ের