পাতা:ভারতী ১২৮৪.djvu/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতী অ ১২৮৪) বঙ্গসাহিত্য । ネミー | তাম, তাছা হইলেও আমুদের হৃদয় শোকে অবিভূত হইত। কিন্তু নাটকে,সেই বিলাপটি অবিকল প্রতিবিম্বিত হওয়াতে আমাদের হৃদয়ে যে কোন রস উদ্দীপিত হইতেছে তাহা বল বাহুল্য। এখন জিজ্ঞাস্য হইতে পারে যে, প্রকৃত মাতার প্রকৃত রোদন সমস্ত জগৎমণ্ডল একেবারে ভুলিয়া যায়— শুনিয়া কেনই বা আমরা কাতর হই, আর সেই রোদন পাঠ করিয়া কেনই বা আমরা হাস্য সম্বরণ করিতে পারি না ? ইহার উত্তর অতি সহজেই দেওয়া যায়। নাটক কিম্বা কাব্য কণপনা-সাগরের তরঙ্গ, কণপনা বিরহিত হইলে নাটকের নাটকত্ব ও কাব্যের কাব্যত্ব থাকে না। কপেন-প্রভাবে কালি দাস পুর-যুগের দুষ্মন্ত ও শকুন্তলাকে কলিযুগে উজ্জয়িনী নগরের এক প্রান্তে বসিয়া দেখিতে পাইয়াছিলেন—মালতী নদীতীরস্থ সেই প্রশস্ত আক্রম প্রদেশে তাহাদের সেই মধুর প্রেমালাপ শুনিতে পাইয়া ছিলেন—মহৰ্ষি করে “ হে সন্নিহিত তরু | গণ”-সম্বলিত আৰ্ত্তনাদ শুনিয়া বিহবল হুইয়াছিলেন এবং পরিশেষে রাজ দুষ্মন্তের সহিত অপ্রম-বাসিনীর বিবাহু দিয়া আপনাকে কৃতাৰ্থ মনে করিয়াছিলেন । এখন শকুন্তলা পাঠ করিতে করিতে পাঠকের হৃদয়ও কম্পনা-স্রোতে উচ্ছসিত হইতে থাকে--পাঠকও ক্ষণকালের জন্য হেমকূট পৰ্ব্বতে উঠিয়া রাজা দুষ্মস্তের সঙ্গে সঙ্গে শকুন্তলার উদ্ধত সন্তানটীকে দেখিতে পায়— কম্পনা ক্রমে আরও বলবতী হইতে থাকে, পাঠক সেই হেমকূট পৰ্ব্বতের দৃশ্য ব্যতীত জীবিভাব হয়। এখন দেখা যাইতেছে যে, পুত্র রোহিতাসোর শোকে কমলা :ওরে। স্বচক্ষে সিংহ-শাবকট দেখিতে পায়, স্বকৰ্ণে শুনিতে পায় দুষ্মন্ত বলিতেছেন "আহ ! যাহার এই পুত্র সে ইহাকে ক্রোড়ে লইয়৷ যখন ইহার মৃদুমধুর আধ-আধ কথাগুলি শ্রবণ করে, তখন সেই পুণ্যবান ব্যক্তি কি অনিৰ্ব্বচনীয় প্রীতি প্রাপ্ত হয় ”—পাঠকের হৃদয়ও কণ্টকত হয়। কিন্তু পাঠক যদি ঐরূপ বিলাপ না শুনিয়া একজন আধুনিক কবির মতন ছুষ্মন্তের মুখে শুনিতে পায়— “যবে আধ’ অtধ’ বোলে বাবা বাবা ব’লে বাছা অমৃত ছড়ায় রে, কি আনন্দে নাচে প্রাণ পিতাই তা জানেরে !” তাহা হইলে মুহূৰ্ব মধ্যেই পাঠকের কম্পনামোহ, পাঠকের মুখস্বপ্ন ভগ্ন হইয়া যায়, কল্পনার দৃষ্টিপথ হইতে মুহূৰ্ত্ত-মধ্যে হেমকূট পৰ্ব্বত, সিংহশাবক, মুনিকন্যাগণ : বিলীন হইয়া যায়, এবং তাছার পরিবর্তে | লেপ,কাথা, চুমিকাটি সম্মুখে প্রকাশ পায়, । 3. সুতরাং আকস্মিক ভাব-বিপর্যায়ে হাস্যরসের প্রকৃত জগতে যে কথা গুলিতে আমাদের মনে কোন রসের উদয় হয়, কবিতার | জগতে অর্থাৎ কণপনার জগতে তাহাতে বিপরীত ফল দশে। কবিতার জগতে প্রকৃতি ও কণপনাকে এরূপ কৌশলে মিশ্রিত করিতে হইবে যে, সেই মিশ্র4 প্রভাবে পাঠকের হৃদয়তন্ত্র কবির হৃদয়ের সহিত তালে তালে বাজিতে থাকিবে, এবং তাহা হইলে বাক্যং রসাত্মকংকাব্যংশ্লোকটির সার্থকতা প্রতিপন্ন হইবে । হরিশ্চন্দ্রের