পাতা:ভারতী ১২৮৪.djvu/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গ সাহিত্য। (ভারতী অ ১২৮৪ বাহিক ও আন্তরিক কারণ বশতঃ সেই আদশের বিকৃতভাব উপস্থিত হয়। রাজ নীতি-সম্পৰ্কীয় মত-বৈষম্য ও দ্বিতীয় চার্ল| সের রাজ্যকালীন বিলাস-প্রিয়তা হেতু | মিলটনের প্রতি, এবং সামাজিক রীতিনীতি|ੱਚ কারণে সেলির প্রতি, তৎসাময়িক ! লোকদের বিরাগ, এমন কি, ধৰ্ম্মোন্মত্তত ঘটিত কারণে সেকসপিয়ারের প্রতি ਆਿਚੋরিটানদিগের শক্রতা, তাহার দেদীপামান সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। এইরূপ কোথাও হিংসা, কোথাও মতভেদ, কোথাও মনের বিকৃত গঠন বশতঃ আমরা সেই সৰ্ব্ববাদীসন্মত অদশের বিকার দেখিতে পাই । একজন বিরহিনী যেমন বলিয়ছিলেন “যে | চন্দ্রের অপেক্ষা চণ্ডাল আর কেহই নাই।” । একজন গণিতবিদ ও সেইরূপ বলিয়াছিলেন যে, প্যারাডাইস লস্ট, তাহার পক্ষে অতি বিরক্তিকর, কেননা মিল্টন কিছুই প্রমাণ করিতে পারেন নাই। এইরূপ কারণ বশতঃই ভলটেয়ার সেক্সপিয়ারকে অসভ্য বলিয়াছেন ও জেফি, ওয়ার্ডসওয়ার্থকে | আপোগণ্ড প্রলাপী কহিয়াছেন । এখন অীমরাবলিতে পারি যে,এই সকল বাহুল্য কারণ না থাকিলে সৰ্ব্বহৃদয়ে বিরাজিত সেই সৰ্ব্ব-বাদী-সম্মত আদর্শের প্রভাবে দেশ কাল ও অবস্থার বিস্ত্র সকল তিরোহিত হইয়া সমস্ত জগৎ আলোকিত হইত এবং সাহিত্য-দৰ্পণকারের কথা পলকে প্রতিপন্ন হুইত । - সাহিত্যদর্পণকারের কবিতার লক্ষণটী নিতান্ত সংক্ষেপে ব্যক্ত হওয়াতে সা হিত্য-মণ্ডলে একটি ঘোর ভ্রাস্তি প্রচারিত এমন কি, কমলার অবস্থা স্বচক্ষে না দেখি হইয়াছে। সেই ভ্রান্তিটি এখনও ভঞ্জন না করিলে আর রক্ষা নাই। দর্পণকার নাকি বলেন যে “রসাত্মক বাক্যের নামই কাব্য” সুতরাং পুত্ৰশোক-বিহবলা রোরুদ্যমান জননীর বিলাপ-বাক্যগুলিও কবিতানামে আখ্যাত হইতে পারে। কেননা নিতান্ত পাষাণ হৃদয় ও সে বিলাপ শুনিলে সহজেই দ্রব হইয়া যায়। এই হেতু কেহ কেহ মনে করেন যে, মাতার বিলাপ শুনিয়া যদি শ্রোতার মন দ্রব হয় তাহা হইলে অবিকল তাহ লিপি-বদ্ধ করিলে ও পাঠকের মন দ্রব হইবে—সুতরাং লেখকেরও কবিত্বের পরাকাষ্ঠী প্রদর্শিত হইবে । শুদ্ধ মাতার বিলাপ কেন, তাহারা মনে করেন যে, প্রকৃত জগতে যাহা অামাদের হৃদয়-তন্ত্রে আঘাত করে, লিখিত হইল ও তাহ। সেইরূপে তাঘাত করিবে । * রাজা হরিশচন্দ্রের পুত্র রোহিতাস্যের মৃত্যু হইলে তামাদের দেশীয় একজন নাটককার কমলাকে এই বলিয়া বিলাপ কর ইতেছেন— | "রোহিত রে! ওরে আমার প্রাণের রো | হিত রে ; ওয়ে বাবা ! গুরে বাবা ! কি হলোরে—ওরে কেন তুই কথা ক’সনে ? | ওরে রোহিত রে!” স্বীকার করি, যদি আ. ] মর সেই ঘোর অন্ধকারময়ী রজনীতে সেই | ভয়াবহ শ্মশান-প্রান্তরে উপস্থিত থাকিতাম | তাহা হইলে নিশ্চয়ই কমলার বিলাপে | আমাদের হৃদয় ছিন্ন ভিন্ন হুইয়া যাইত । ] য়াও যদি শুদ্ধ তাহার রোদন শুনিতে পাই ।