পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা

স্থানীয় স্ব-তন্ত্র অনুষ্ঠানগুলিকে বিলুপ্ত করিয়া দিয়াছে এবং তৎপরিবর্ত্তে যন্ত্রবৎ প্রাণহীন ঐক্য স্থাপন করিয়াছে। কিন্তু আবার ইহারও বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ায় আমরা দেখিতে পাইতেছি সেই প্রাচীন নীতিসকল পুনরায় জাগিয়া উঠিতেছে,—ভারতবাসীর স্থানীয় স্ব-তন্ত্র জীবন পুনর্গঠনের দিকে প্রবণতা, জাতি ও ভাষার সত্য বিভাগ অনুযায়ী প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবি, রাষ্ট্রশরীরের স্বাভাবিক জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় জীবন্ত অনুষ্ঠানরূপে অধুনালুপ্ত পল্লী-সমাজের আদর্শের দিকে ভারতীর মনের পুনরার দৃষ্টি; এবং এখনও পুনরুজ্জীবিত না হইলেও, অপেক্ষাকৃত উন্নতব্যক্তিগণের মনে আভাসরূপে দেখা দিতে আরম্ভ করিতেছে, ভারতীয় জীবনের উপযোগী কম্যুনাল ভিত্তির, এবং আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠার উপর ভারতীয় সমাজ ও রাষ্ট্রকে নবীভূত ও পুনর্গঠিত করিবার আরও সত্য আদর্শ।

 অতএব ভারতীয় ঐক্যসাধনের চেষ্টা যে ব্যর্থ হইয়াছিল, এবং তাহার পরিণাম হইয়াছিল বিদেশীর আক্রমণ এবং শেষ পর্য্যন্ত পরাধীনতা, তাহার কারণ কাজটির বিশালতাও বটে আবার উহার বিশিষ্ট স্বরূপও বটে, কারণ কেন্দ্রীভূত সাম্রাজ্যের সহজ পন্থা ভারতে প্রকৃতপক্ষে কৃতকার্য্য হওয়া সম্ভব ছিল না, অথচ মনে হইয়াছিল যে এইটিই বুঝি একমাত্র পন্থা, এবং পুনঃ পুনঃ এই দিকেই চেষ্টা করা হইয়াছিল; সে চেষ্টার আংশিক সফলতা