পাতা:ভারতের রাষ্ট্রনীতিক প্রতিভা - অরবিন্দ ঘোষ (১৯২৫).pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে সমাজ ও রাষ্ট্র

হইয়া দাঁড়ায়। বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, এক শক্তিশালী শাসক ও যোদ্ধৃশ্রেণীর আবির্ভাব হয়, সমাজের অবশিষ্ট লোক ব্যবসায়ী, শিল্পী ও কৃষক-শ্রেণীতে বিভক্ত হয় এবং এক দাস বা সেবকশ্রেণীর সৃষ্টি হয়। সম্ভবতঃ আর্য্যগণ যাহাদিগকে যুদ্ধে পরাজিত করিতেন, তাহারা ভৃত্য ও শ্রমিক হইত, তাহাদিগকে লইয়াই এই দাস-শ্রেণীর সৃষ্টি হয়। ভারতবাসীর মনের উপর বহু প্রাচীনকাল হইতেই ধর্ম্ম ও আধ্যাত্মিকতার প্রাধান্য আছে। এই জন্যই সমাজের শীর্ষভাগে ব্রাহ্মণসম্প্রদায়ের আবির্ভাব হয়; তাঁহারা পুরোহিত, পণ্ডিত, আইন-কর্ত্তা, বেদবিৎ বলিয়া পরিচিত ছিলেন। অন্যান্য দেশেও এইরূপ শ্রেণীর আবির্ভাব হইয়াছে বটে, কিন্তু ভারতবর্ষে ব্রাহ্মণসম্প্রদায় যেমন স্থায়ী, সুনির্দ্দিষ্ট, সমুচ্চ স্থান অধিকার করিয়াছে, এমনটি আর কোথাও দেখিতে পাওয়া যায় না। ভারতবাসীর ন্যায় যে সকল দেশের লোকের মানসিক ভাব জটিল নানামুখী নহে, সেখানে এরূপ সম্প্রদায়ের উদ্ভব হইলে, তাহারাই সমাজে সর্বেসর্ব্বা হইয়া পড়িত। কিন্তু যদিও ব্রাহ্মণদের প্রভাব ক্রমশঃই বর্দ্ধিত হইতেছিল এবং শেষ পর্য্যন্ত তাহারাই প্রাধান্য লাভ করিয়াছিল, তথাপি ভারতে ব্রাহ্মণসম্প্রদায় কোন দিনই রাজশক্তিকে অধিকার করে নাই বা করিতে পারে নাই। রাজার ও জনসাধারণের