পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ভারত-প্ৰতিভা ১৮৭৭ খৃষ্টাব্দে বিশ্বনাথবাবু মধ্যপ্রদেশের রায়পুর নামক স্বাস্থ্যকর স্থানে সপরিবারে বায়ু পরিবর্তন করিতে যান। নরেন্দ্রনাথের বয়স তখন চতুৰ্দশবর্ষ মাত্র। তখন তিনি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়িতেন। বিশ্বনাথবাবুর বাসায় বহু পণ্ডিত ও বিদ্বান ব্যক্তি আসিতেন। নরেন্দ্রনাথ স্থিরভাবে বসিয়া আঁহাদের আলোচনা শ্ৰবণ করিতেন। মধ্যে মধ্যে তিনি সে সকল বিষয়ে স্বাধীন মত ব্যক্ত করিতেন। পিতৃবন্ধুগণ বালকের বুদ্ধিমত্তায় চমৎকৃত হইতেন। একদা আলোচনা-প্রসঙ্গে বহু প্ৰসিদ্ধ সাহিত্যিকের রচনা হইতে গদ্য ও পদ্য আবৃত্তি করিয়া নরেন্দ্রনাথ কোন পিতৃবন্ধুকে চমৎকৃত করিয়াছিলেন। তিনি বলিয়াছিলেন, “কালে এই বালক বাঙ্গালা সাহিতো। প্ৰতিষ্ঠালাভ করিবে।” যাহারা স্বামী বিবেকানন্দের রচিত “বৰ্ত্তমান ভারত,” “পরিব্রাজক,” “প্ৰাচ্য ও পাশ্চাত্য,” “ভাববার কথা” প্রভৃতি গ্ৰন্থ পাঠ করিয়াছেন, তঁহারা জানেন, নরেন্দ্রনাথের পিতৃবন্ধুর এই ভবিষ্যদ্বাণী কত দূৱ সফল হইয়াছে। . নরেন্দ্রনাথ অধিকাংশকালই খেলাধূলায় যাপন করিতেন। নিয়মিত পাঠ আয়ত্ত করিতে এক ঘণ্টার অধিক সময় তঁহার লাগিতা না । বৎসরের অধিকাংশকালই আমোদ-প্ৰমোদে অতিবাহিত করিয়া পরীক্ষার পূর্বে দুই তিন মাস মাত্র তিনি মনোযোগ দিয়া অধ্যয়ন করিতেন। অঙ্কশাস্ত্রের প্রতি তাহার অনুরাগ ছিল না । পিতার দু্যায় তিনিও উপহাস সহকারে বলিতেন, “অঙ্কশাস্ত্রটা দোকানদারের জুয়াচুরী বিদ্যা।” কিন্তু ইতিহাস, সাহিত্য প্রভৃতি অন্যান্য বিষয়ে তঁহার পাঠস্পৃহা অত্যন্ত বলবতী দেখা যাইত। ষোড়শ বর্ষ বয়সে নরেন্দ্রনাথ প্ৰবেশিকা পরীক্ষা প্ৰদান করেন। সমগ্ৰ । বৎসর পাঠ্যপুস্তক স্পর্শ করেন নাই। . পরীক্ষার অব্যবহিত পূৰ্ব্বে এ জন্য তঁহাকে অত্যধিক পরিশ্রম করিতে হইয়াছিল। . অসাধারণ স্মৃতিশক্তির