পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ। IX í সৰ্ব্বদাই উষ্ঠত ছিলেন। শৈশব হইতে জীবনের শেষ সীমা পৰ্যন্ত এই ৷ সকল মহাদগুণের অভাব। কখনও তঁহার হয় নাই। একবার একস্থানে । অভিনয় হইতেছিল । আদালতের পেয়াদা সেই সময় রঙ্গমঞ্চের উপর আসিয়া প্রধান অভিনেতার হস্তে ওয়ারেন্ট দিয়া বলিল যে, সে তাহাকে রাজার আদেশ অনুসারে গ্রেপ্তার করিতেছে। এইরূপ অপ্রত্যাশিত প্রতিবন্ধকতায় রঙ্গস্থল কোলাহল-মুখরিত হইয়া উঠিল। নরেন্দ্রনাথ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। দৃঢ়স্বরে তিনি তখনই পেয়াদাকে অভিনয়স্থল হইতে চলিয়া যাইতে আদেশ করিলেন ; বলিয়া দিলেন, “যতক্ষণ । পালা শেষ না হয়, বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকু গে। তার পর তোমার কাজকরে। এখন রাসভঙ্গ করুবার কোন অধিকার তোমার নেই।” তেজস্বী / বালকের কণ্ঠস্বরে সুর মিলাইয়া বহু কণ্ঠে তীব্ৰ প্ৰতিবাদ উখিত হইলে । বেগতিক দেখিয়া পেয়াদা বাহিরে চলিয়া গেল। কুল্পনাশক্তি নরেন্দ্রনাথের অত্যন্ত প্রখরা ছিল। তিনি কল্পনার সাহায্যে শ্ৰোতৃমণ্ডলীকে চমৎকৃত ও মুগ্ধ করিয়া গল্প শুনাইতে পারিতেন। বর্ণনাশক্তি বাল্যকাল হইতেই তাহার মধ্যে পরিপুষ্ট হইয়া উঠিয়াছিল। তঁহার সহৃদয়ত, তেজস্বিতা, দয়া, দক্ষিণ্য প্রভৃতি সকল প্রকার গুণে প্রতিবেশিগণও নরেন্দ্রনাথের অত্যন্ত অনুরক্ত ছিলেন। পল্লীর যে কোনও অন্তঃপুরে তঁহার অবারিতদ্বার ছিল। শুদ্ধান্তঃপুত্রচারিণীদিগের কাহাকেও মাসী, কাহাকেও পিসী, কাহাকেও খুড়ী বা মামী অথবা দিদি ইত্যাদি মিষ্ট ও গৌরবজনক নামে তিনি সম্বোধন করিতেন। নিম্নশ্ৰেণীয় রমণীদিগকেও মাসী পিসী । বলিয়া ডাকিতে আঁহার সঙ্কোচবােধ হইত না। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই তাহাকে ভালবাসিত, স্নেহ করিত, শ্ৰীতি ও শ্রদ্ধার পুষ্পাঞ্জলি প্ৰদান করিত। তিনি সকলেরই সুখ-দুঃখের অংশভাগী, ব্যথার ব্যাখী ছিলেন। ,