পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৬ : ভারত-প্ৰতিভা করিতে আরম্ভ করেন। কলেজের দর্শন-শাস্ত্রের অধ্যাপক তঁহার বিশ্লেষণী শক্তি ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাইয়া চমৎকৃত হইয়াছিলেন। তিনি বলিয়াছিলেন, “জৰ্ম্মণী অথবা ইংলণ্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ে দৰ্শন-শাস্ত্ৰবিষয়ে এমন একটিও ধীমান ছাত্ৰ দেখি নাই।” সংস্কৃত-ভাষাতেও নরেন্দ্রনাথের যথেষ্ট অনুরাগ ছিল। কিন্তু মাতৃভাষা বাঙ্গালার প্রতি তঁাহার অনুবাগের সীমা ছিল না । বি, এ শ্রেণীতে অধ্যয়নকালেই তঁহার মনোরাজ্যে একটা বিষম বিপ্লব সূচিত হয়। পাশ্চাত্য দর্শনশাস্ত্রপাঠে তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান হইয়া উঠিতে লাগিলেন। হিন্দুধৰ্ম্মের গোড়ামী তাহার চিত্তকে পীড়িত করিতে লাগিল। তখন বাঙ্গালাদেশে সংস্কাবের আন্দোলন প্রবলভাবে চলিতেছিল। সেই সকল আন্দোলনেৰ সহিত যুবক নৰেন্দ্রনাথ ঘনিষ্টভাবে পরিচিত হওয়ায়, তঁহার চিন্তা রাজ্যে এক অভিনব পরিবাৰ্ত্তন দেখা গেল। নরেন্দ্রনাথ পুরোহিত-শ্রেণীর প্রতি বীতশ্রদ্ধ হইয়া উঠিলেন। তঁহার ধারণ জন্মিস্নাছিল সে, পুরোহিত-শ্রেণীর প্রভুত্ব সমগ্র বাঙ্গালী জাতির ধৰ্ম্মজীবন বিরুত করিরা ফেলিয়াছে। সত্যনিষ্ঠ নির্ভীক বিবেকানন্দ এই অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে-পুরোহিত-শ্রেণীর প্রভুত্বের বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান চাইতে সঙ্কল্প করিলেন। পাশ্চাত্য-দর্শনের প্রভাব তখন নরেন্দ্রনাথের মধ্যে পূর্ণভাবে আধিপত্য করিতেছিল। হিন্দুধৰ্ম্মের প্রতি বিরাগবৃদ্ধি। ά হেতু তখন তিনি ব্রাহ্মধৰ্ম্মে দীক্ষা গ্ৰহণ করেন। হেগেলে, শোপেনহারার, মিল, ক্যােণ্ট প্রভৃতির মতবাদের দ্বারা তিনি জীবনকে কিযুৎপরিমাণে পরিচালিত করিতে লাগিলেন। সে অবস্থায় স্পেন্সারকেই তিনি সর্বাপেক্ষা অভ্রান্ত বলিয়া মনে করিয়া লইয়াছিলেন। ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান ও পুরোহিতদিগের সংকীর্ণতা দেখিয়া