পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ob ভারত-প্রতিভা । ‘দাঁড়াইলেন, অধিকন্তু কোনও জ্ঞাতি তঁহাদিগকে গৃহচ্যুত করিবার জন্য মোকদ্দমাও উপস্থিতকরিলেন। প্ৰাণাধিক ভ্রাতা ও ভগিনীগণের অনশনক্লিষ্ট মুখ দেখিয়া নরেন্দ্রনাথের সন্দাপ্রফুল্ল হাস্যময় আননে অনেক সময় নৈরাশ্যের অন্ধকার ঘনাইয়া উঠিত। অন্যত্ৰ নিমন্ত্রণ আছে বলিয়া মধ্যে মধ্যে তিনি গৃহে আহাৱ করিতেন না। কারণ, তঁহার অংশের আহাৰ্য্য দ্বারা ভ্ৰাতৃভগিনীদিগের ক্ষুধার কষ্ট কিয়ুৎপত্রিমাণে দূরীভূত হইবে। অথচ কোন বন্ধুর গৃহেও তিনি আহার করিতেন না। ক্রমাগত উপবাসে তাহার শরীর ক্রমে শীর্ণ ও দুর্বল হইয়া পড়িতে লাগিল। এমন কি বলবতী ক্ষুধার তাড়নায় কোনও কোনও দিন তিনি মূৰ্ছিতবৎ পড়িয়া থাকিতেন। কতিপয় সহৃদয় বন্ধু তঁহার বিপদের অবস্থা অবগত হইয়া তাঁহাকে অর্থ-সাহায্য করিতে উদ্যত হইয়াছিলেন, কিন্তু আত্মনির্ভরশীল নরেন্দ্রনাথ সবিনয়ে সে সকল সাহায্য প্ৰত্যাখ্যান করিতেন। কাহারও দান। তিনি গ্ৰহণ করিতে সম্মত ছিলেন না। আত্মমৰ্য্যাদা-জ্ঞান তাহার কিরূপ প্ৰবল, তাহা সেই সকল বন্ধু অবগত ছিলেন, এজন্য তঁহার মধ্যে মধ্যে নরেন্দ্রনাথকে নিমন্ত্রণ করিতেন। কিন্তু সংসারের দুঃখময় চিত্ৰ মনে করিয়া, অনশনক্লিষ্ট মাতা, ভ্রাতা ও ভগিনীদিগের মুখচ্ছবি মনে করিয়া অনেক সময় নরেন্দ্রনাথ সে নিমন্ত্রণও প্রত্যাখ্যান করিতেন। তিনি উদরপূৰ্ত্তি করিয়া রসনা-তৃপ্তিকর আহাৰ্য্য ভোজন করিবেন, আর তঁহার প্রিয়তম, স্নেহভাজন কনিষ্ঠীগণ তাহাতে বঞ্চিত থাকিবে ? চাকরী করিয়া সংসারের দুঃখ ঘূচাইবার জন্য নরেন্দ্রনাথ প্ৰাণপণে চেষ্টাও করিতে লাগিলেন, কিন্তু সহসা কোন উপায় হইল না। মোটা গুণ-চটের মত বস্ত্র পরিয়া নগ্নপদে অনশনক্লিষ্ট নরেন্দ্রনাথ মধ্যাহ্নে প্রচণ্ড রৌদ্রে দরখাস্ত হস্তে . আপিসে আপিসে ঘূরিতে লাগিলেন। কিন্তু কোথাও কোনরূপ