পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী বিবেকানন্দ । S আশ্বাসের সংবাদ পাইলেন না। এই সময় সংসারটাকে যেন আসুরিক সৃষ্টি বলিয়া তাহার ধারণা হইত। সময় বুঝিয়া অবিদ্যারূপিণী মহামায়াও ভঁহাকে করায়ত্ত করিবার জন্য চেষ্টার ত্রুটি করিলেন না। এক সঙ্গতিশালিনী পূর্ব হইতেই নরেন্দ্রনাথের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়াছিলেন। অবসর বুঝিয়া তিনি প্ৰস্তাব করিয়া পাঠাইলেন, তঁহার সুখ-দুঃখের অংশভাগী হইলে নরেন্দ্র তদীয় বিপুল সম্পত্তির দ্বারা সাংসারিক সমুদয় অনটন ঘূচাইতে পরিবেন। আজন্ম ব্ৰহ্মচারী, জিতেন্দ্ৰিয় নরেন্দ্ৰনাথ নিদারুণ অবজ্ঞা সহকারে সেই স্মৃণিত প্ৰস্তাবে উপেক্ষা করেন। কয়েকজন ধনীর পুত্র তঁহাকে সুরাপানে প্ৰলুব্ধ করিবার চেষ্টাও করিয়াছিল; বারাঙ্গন দ্বারা তঁহাকে সুপথ-ভ্ৰষ্ট করিবার আয়োজনও হইয়াছিল। কিন্তু নরেন্দ্ৰনাথ অবিচলিতভাবে এই সকল কঠোর পরীক্ষায় অবহেলায় উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন। " মাসের পর মাস চলিয়া গেল, তথাপি সংসারিক অভাব দূর করিবার উপযুক্ত সামান্য বেতনের চাকরীও নরেন্দ্রনাথের ভাগ্যে জুটিল না। একদিন উপবাসে অবসান্ন-দেহে তিনি বৃষ্টিতে ভিজিয়া বাড়ী ফিরিতেছিলেন ; সহসা অসহনীয় ক্লান্তিবশতঃ তিনি পথিপার্শ্বস্থ কোনও বাড়ীর রকের উপর বসিয়া পড়িলেন। সেই সময়ে ক্ষণকালের জন্য তঁহার বাহ-চৈতন্য ছিল না । ঈশ্বরের ন্যায়পরতা ও অপার করুণার সামঞ্জস্য সম্বন্ধে এতদিন তিনি যাহা মীমাংসা করিতে পারেন নাই, সেই দিন অকস্মাৎ অন্তরের গৃঢ়তম প্রদেশে এই গুরুতর বিষয়ের মীমাংসা তিনি দেখিতে পাইয়াছিলেন। পরীক্ষণেই অমিত শক্তিলাভ করিয়া তিনি গৃহে ফিরিয়া আসেন। " নরেন্দ্রনাথ যখন বিবেকানন্দ নামে দেশপ্রসিদ্ধ হন, সেই সময় তিনি গুরুভ্রাতাদের নিকট নিজের এই উপলব্ধ জ্ঞানের কথা প্রকাশ করেন । , , 1