পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভগবান শ্ৰীশ্ৰীরামকৃষ্ণদেব। - ৫ কালীবাড়ীর সদাব্রতে সর্বদা সাধু-সন্ন্যাসীর সমাগম হইত। একবার তোতাপুরী কালীবাড়ীতে আসিয়া, এগার মাস রহিলেন ; ঠাকুরকে, বেদান্ত শুনাইলেন ; দীক্ষিত করিলেন। তোতা দেখিলেন, যে নিৰ্ব্বিকল্প . সমাধি করিতে যোগিগণের কত কালকালান্ত কাটিয়া যায়, তিনদিনমাত্ৰ কুম্ভকাদি যোগানুষ্ঠানের পরেই ঠাকুরের সেই নির্বিকল্প সমাধি হইল। যোগসাধনাবস্থায় ঠাকুর এমন গভীর সমাধিতে নিমগ্ন হইয়াছিলেন যে, ছয় মাস। তঁহার বাহাজ্ঞান ছিল না। এক জন সাধু দণ্ডের দ্বারা প্ৰহার করিয়া তাহার মুখে দুধ ঢালিয়া দিয়া শরীর-রক্ষা করিতেন। হলধারী নামে বৈদান্তিক সন্ন্যাসী দক্ষিণেশ্বরে আসিয়া ঠাকুরকে বেদান্ত উপদেশ দেন, এবং সাকার উপাসনা ও কীৰ্ত্তনাদি মায়ার কাৰ্য্য বলিয়া উপহাস করেন। ঠাকুর সংশয়াপন্ন হইয়া মাকে জিজ্ঞাসা করিলে, তিনি সন্দেহভঞ্জন করেন । এত আত্মনিবেদন ছিল যে, প্ৰত্যেক কাৰ্য্যেই তিনি মায়ের উপদেশ লইতেন। নির্ভর প্রভাবে পঞ্চবটীর ভাঙ্গা বেড়া বাধিবার জন্য বঁাশ-বাখারী গঙ্গার বানে ভাসিয়া আসিয়াছিল। এই সময় ঠাকুর বলিতেন,-“মা, তোর কথা কেবল শুনবাে, আমি 'শাস্ত্ৰও জানি না, পণ্ডিতও জানি না। তুই বুঝাবি, তবে বিশ্বাস করবো।” তখন ঠাকুরের মনে ভাসিতেছে—যিনি অখণ্ড, সচ্চিদানন্দ, পরব্রহ্ম, তিনিই মা । কালীবাড়ীতে সমাগত সাধুরা এই সময় তাহাকে ‘পরমহংস” আখ্যা দেন। হৃদয় নামে এক আত্মীয় তখন মা কালীর পূজা ও ঠাকুরের সেবা করিতেন। সকলেই ঠাকুরকে ‘উন্মাদ সাব্যস্ত করিল-রাণী রাসমণি চিকিৎসার ব্যবস্থা করিলেন-কবিরাজ গঙ্গাপ্রসাদ সেন কবিরাজী