পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sir ভারত-প্ৰতিভা আশার বাণী শুনাইয়াছিলেন, খৃষ্টের পর আর কোনও প্রাচ্যদেশবা নিকট পাশ্চাত্য জগৎ তেমন কথা শুনে নাই।” ১৯ শে সেষ্টেম্বর ধৰ্ম্ম-মহাসভায় “হিন্দুধৰ্ম্ম” নামক একটি অপূৰ্ব প্ৰবন্ধ স্বামীজী পাঠ করেন। ২০শে তারিখে “ভারতবর্ষ ধৰ্ম্মের অভাব্যপীড়িত নহে” বলিয়া একটা সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন। ভারতবর্ষে অর্থেরই যে প্রকৃত অভাব এবং সেই জন্যই তিনি মার্কিণে আসিয়াছেন, সে কথাটা সকলকেই তিনি বুঝাইয়া দিয়াছিলেন। সকলেই বুঝিতে পারিল, তিনি ধৰ্ম্মের রহস্য উদঘাটনেই সুদক্ষ দার্শনিক নহেন, অকপট স্বদেশ-প্রেমিক। স্বামীজীর অপূর্ব বক্তৃতা-শক্তি এবং অতুলনীয় ধৰ্ম্মজ্ঞান দেখিয়া শ্ৰোতৃবৃন্দ তাহার এমনই অনুরক্ত হইয়া পড়িয়াছিলেন যে, প্ৰত্যহই তাহারা বিবেকানন্দের কিছু না কিছু বক্তব্য শুনিবার জন্য অধীর হইয়া থাকিতেন। সতের দিন ধরিয়া সভায় সহস্ৰাধিক প্ৰবন্ধ পঠিত হইয়াছিল। তাহার অধিকাংশই দীর্ঘ এবং নীরস। সভারম্ভের পূর্বেই সভাপতি বলিয়া দিতেন। যে, সর্বশেষে বিবেকানন্দের বক্তৃতা আছে । তাহার বক্তৃতা শুনিবার আশায় শ্রোতৃবৰ্গ ঐ সকল নীরস প্ৰবন্ধ ধৈৰ্য্য সহকারে শ্রবণ করিতেন। যে বক্তা যেমনই বক্তৃতা করুন না কেন, বিবেকানন্দই ধৰ্ম্ম-মহাসভার দিগ্বিজয়ী বীর বলিয়া সকলের নিকট হইতে শ্ৰদ্ধা ও পূজার অর্ঘ্য লাভ করিলেন। এইরূপে অপরিচিত প্ৰতিষ্ঠাহীন, তরুণ সন্ন্যাসী শুধু চিকাগো মহাসভায় বক্তৃতার ফলে বিশ্ববরেণ্য মহাপুরুষ বলিয়া প্রতিষ্ঠালাভ করিলেন। তঁহার নাম লোকের মুখে মুখে ফিরিতে লাগিল, তাহার প্রতিকৃতি নগরের সর্বত্র প্রদর্শিত হইতে থাকিল । সংবাদপত্ৰ সমূহ মুক্তকণ্ঠের্তাহার কীৰ্ত্তি ও যশোর কথা প্রচার করিতে লাগিল। নিউষ্টয়ার্ক হেরাল্ড নামক সর্বশ্রেষ্ঠ পেঁড়িা সংবাদপত্ৰও ভঁহাকে দিব্যদৃষ্টিসম্পন্ন মহাপুরুষ বলিয়া উল্লেখ করিলেন।