পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর। । ১৭৩ বেতন মাত্ৰ দশমুদ্রা । হিন্দুস্কুলে পুত্রকে পড়াইতে গেলে তথায় মাসিক পাচ টাকা শুধু বিদ্যালয়ের বেতন দিতেই হইবে ; সুতরাং ইচ্ছাসত্ত্বেও ঠাকুরদাস তখন ঈশ্বরচন্দ্রকে উক্ত বিদ্যালয়ে ভৰ্ত্তি করাইয়া দিতে সমর্থ হন। নাই। বাসার সন্নিহিত একটি পাঠশালায় ঈশ্বরচন্দ্ৰ পাঠাভ্যাস করিতে যাইতেন। ঠাকুরদাসের আশ্রয়দাতা জগদ্দুল্লভ বাবু পিতাপুত্ৰ উভয়কেই ভালবাসিতেন। কেবল তাহাই নহে, তাহার পরিবারস্থ অন্যান্য সকলেও ঈশ্বরচন্দ্ৰকে যথেষ্ট স্নেহের চক্ষে দেখিতেন। পিতা ও পুত্ৰ সকলেরই নিকট হইতে পৰ্য্যাপ্ত আদর-যত্ন পাইতেন। জগদ্দুল্লভ বাবুর কনিষ্ঠ সহোদরা রাইমণি ঈশ্বরচন্দ্রকে পুত্ৰাধিক স্নেহ করিতেন। উত্তরকালে বিদ্যাসাগর মহাশয় এই রমণীর সম্বন্ধে আলোচনা-প্রসঙ্গে বলিতেন যে, এরূপ উন্নত হৃদয়া স্নেহশালিনী রমণী তিনি আর কোথাও দেখেন নাই। ঈশ্বরচন্দ্ৰ তাহাকে মাতার ন্যায় ভক্তি ও শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিতেন। তাহার প্রসঙ্গ উখাপিত হইলে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নয়নযুগল অশ্রুসিক্ত হইত। রাইমণির স্নেহ-যত্নে ঈশ্বরচন্দ্ৰ স্নেহময়ী মাতা ও পিতামহীর অভাৰ অনেক পরিমাণে বিস্মৃত হইয়াছিলেন। রাইমণি নানাপ্রকার মিষ্টবাক্যে, আহাৰ্য্যদানে ও ক্রীড়ানক দেখাইয়া বালক ঈশ্বরচন্দ্রের মন ভুলাইয়া রাখিতেন। কলিকাতায় আসিবার কিয়াৎকাল পরে ফাস্তুন মাসের প্রারম্ভেই ঈশ্বরচন্দ্র জরাতিসাররোগে আক্রান্ত হন। রোগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাইতেছে শুনিয়া র্তাহার পিতামহী কলিকাতায় আসিয়া তাহাকে দেশে লইয়া যান। সেখানে গিয়া সেবাশুশষার গুণে ঈশ্বরচন্দ্র আরোগ্য লাভ করেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথমভাগে ঠাকুরদাস পুত্ৰকে পুনরায় কলিকাতায় লইয়া আসেন।