পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর। יש צ * পীড়িতের বন্ধু ঈশ্বরচন্দ্র বৃদ্ধের মস্তক হইতে বোঝা নিজের মস্তকে তুলিয়া লইয়া বুদ্ধকে পথ দেখাইয়া চলিতে বলিলেন। তার পর বুদ্ধের বাটীতে সেই বোঝা নামাইয়া দিয়া পুনরায় পদব্ৰজে কলিকাতায় প্রত্যাবৰ্ত্তন করেন। পরের মোট বহিয়া লইয়া যাওয়া সম্বন্ধে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জীবনে অনেক প্রকার ঘটনার কথা শুনা যায় । বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পিতৃমাতৃভক্তি অতুলনীয় ছিল । মাতার একটি মাত্ৰ কথায় তিনি প্ৰসন্নচিত্তে অসাধ্য সাধন করিতে পারিতেন । তঁহার তৃতীয় সহােদরের বিবাহ উপলক্ষে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জননী পত্ৰযোগে তাহাকে লিখিয়া পাঠান যে, উক্ত বিবাহে তাহাকে আসিতে হইবে } তখন ফোট উইলিয়ম কলেজে বিদ্যাসাগর মহাশয় চাকরী করিতেছিলেন । মাতার আদেশ অলঙ্ঘনীয়, তিনি মার্শেল সাহেবের নিকট ছুটীর দরখাস্ত করিলেন ; কিন্তু সাহেব তঁহার ছুটী মঞ্জুর করিতে পারিলেন না। মাতৃভক্ত তেজস্বী বিদ্যাসাগর সংকল্প করিলেন, ছুটী না পাইলে তিনি কৰ্ম্ম পরিত্যাগ পূর্বক বাড়ী যাইবেন । মাতার আদেশ পালন করিতেই হইবে। পরদিবস সাহেবকে তিনি জানাইলেন যে, সাহেব তঁহার ছুটী যদি মঞ্জুর না করেন, তবে তঁহার কৰ্ম্মত্যাগ পত্র ত মঞ্জুর করিবেন! সাহেব তঁহাকে অনেক বুঝাইলেন । বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন, “সাহেব, তোমার কাজ বড় না। আমার মার আদেশ বড় ?” বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অচলা মাতৃভক্তি দর্শনে বিস্ময়-বিমুগ্ধ মার্শেল সাহেব অবশেষে তাহার ছুটি মঞ্জুর করেন । ছুটী পাইয়াই ঈশ্বরচন্দ্র বাসায় ফিরিলেন এবং অবিলম্বে শ্ৰীরাম নামকভৃত্যকে সঙ্গে লইয়া যাত্ৰা করিলেন। তখন আষাঢ় মাস ; বিদ্যাসাগর মহাশয় জল ঝড় বজ্ৰপাত কোনও দিকে লক্ষ্য না করিয়া-দ্রুত চলিতে । লাগিলেন। মাতার আহবানবাণী ব্যতীত তখন তাহার মনে আর কোনও ।