পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

28 bgቲr ১ . ভারত-প্ৰতিভা বিষয়ের স্থান নাই । ক্ৰমে তিনি দামোদরের তীরে আসিয়া উপনীত হইলেন। বর্ষার স্রোন্তোধারায় স্ফীত দামোদর তখন প্ৰলয় মূৰ্ত্তি ধারণ করিয়া প্রবাহিত হইতেছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় তীরে আসিয়া দেখিলেন, খেয়ার নৌকা অপর পারে। উহা এপারে আসিবার সম্ভাবনা তখন নাই । বিদ্যাসাগর উপায়ান্তর না দেখিয়া সাতার দিয়া নদীপার হইবার উপক্ৰম করিলেন। ভূত্য শ্ৰীরাম ও আরও কতিপয় ব্যক্তি তঁহাকে এইরূপ অসমসাহসিক কাৰ্য্যো বাধা দিতে গেলে । মাতৃভক্ত বিদ্যাসাগর কাহারও কথায় কৰ্ণপাত করিলেন না, মাতার আদেশ ছাড়া তখন তঁহার হৃদয়ে অন্য কোনও চিন্তা নাই। দুরন্ত দামোদরের জলরাশি সাতার দিয়া পার হইয়া মাতৃভক্ত বীর দ্রুতপদে চলিলেন । পথিমধ্যে দ্বারকেশ্বর নদও তিনি সস্তরণে উত্তীর্ণ হন । সন্ধাব অন্ধকার যখন ঘনাইয়া আসিল, সেই সময় তিনি প্ৰান্তর মধ্যবৰ্ত্তী “কুড়ান” খালের নিকট পহুছিলেন। সেখানে সে সময় ভীষণ দাসুর ভয় ছিল ; কিন্তু ঈশ্বরচন্দ্র মাতৃপদ স্মরণপূর্বক বিপদসঙ্কুল প্ৰান্তর উত্তীর্ণ হইলেন। রাত্রি নয় ঘটিকার সময় বাড়ী পহুছিয়া দেখিলেন, বর ও বরযাত্ৰী সকলেই চলিয়া গিয়াছেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় উচ্চৈস্বরে ডাকিলেন, “মা, মা, আমি এসেছি।” মাতা দ্বার মুক্ত করিয়া বলিলেন, “কে ঈশ্বর ?” “হঁ” বলিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় মাতৃচরণ বন্দনা করেন । মাতার হৃদয়ে যে বেদনা ছিল, মাতৃভক্ত পুত্রের আগমনে তাহা द्रौङ्कङ হইল। তখন অভুক্ত পুত্রকে মাতা সযত্নে ঘরের যাহা কিছু ছিল, তাহাই আহার করিতে দিলেন। এরূপ মাতৃভক্তির দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল। ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দে সংস্কৃত কলেজের সহকারী সম্পাদকের মৃত্যু হওয়ায় বিদ্যাসাগর মহাশয়কে উক্তপদে নিযুক্ত করিবার জন্য সংস্কৃত কলেজের