পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ysR ভারত-প্ৰতিভা আশাতীতরূপে সাহায্য করিতেন। মাতৃভক্ত বিদ্যাসাগর, মাতৃহীনের অভাব প্ৰাণ দিয়া অনুভব করিতেন। এজন্য অনেক প্রাথী, মাতৃহীন বলিয়া পরিচয় দিয়া অনেকবার বিদ্যাসাগর মহাশয়কে বঞ্চনাপূর্বক সাহায্য লইয়া গিয়াছে। * মাতৃভক্ত ঈশ্বরচন্দ্ৰ মাতৃমন্ত্রের উপাসক ছিলেন। “মা” নাম শুনিলে তঁহার নয়ন অশ্রুসিক্ত হইত। সঙ্গীতে তঁহার অনুরাগ ছিল না ; কিন্তু “মা”। বলিয়া কেহ গান গায়িতে আরম্ভ করিলে তঁাহার হৃদয়-তন্ত্রীতে অপূৰ্ব মূৰ্ছনাঝকৃত হইত। তিনি মন্ত্ৰমুগ্ধবৎ সে গান শ্রবণ করিতেন। আয় বুদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যাসাগর মহাশয় অনেক দুঃস্থ পরিবারের মাসহরার বন্দোবস্ত করিয়া দেন। তঁহার ও তদীয় পিতৃদেবের আশ্রয়দাতা জগদ্দুল্লভ সিংহ মহাশয়ের মৃত্যুর পর তীয় পরিবারবর্গ শোচনীর অবস্থায় নিপতিত হইয়াছেন জানিতে পারিয়া, ঈশ্বরচন্দ্ৰ মাসিক ত্রিশ টাকা করিয়া মাসহরার বন্দোবস্ত করিয়া দেন। এরূপ কত দরিদ্র পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য যে তিনি ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, তাহার ইয়ত্বা নাই । বাল্যবিধবার দুঃখে বিদ্যাসাগরের উদার মহৎ হৃদয় ব্যথিত হইত। কোনও বালিকা বিধবা হইয়াছে শুনিলে, বিদ্যাসাগর মহাশয় কঁাদিয়া ফেলিতেন। ত্ৰয়োদশ কি চতুর্দশবর্ষ বয়ঃক্রম হইতেই তঁহার হৃদয়ে সংকল্প জন্মে যে, তিনি বিধবার দুঃখ মোচন করিবেন। সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হইবার কিছুকাল পরে নানা শাস্ত্র মন্থন করিয়া তিনি বিধবার পুনর্বিবাহের অনুকূলে শাস্ত্রবচন সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন। সমাজে বিধবার বিবাহ দিবার ব্যবস্থা প্ৰচলিত করিবার উদ্দেশ্যেই তিনি এই বহুপরিশ্রম-সাধ্য ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করিয়াছিলেন। ১২৬২