পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 ভারত-প্ৰতিভা ? এই মনস্বী পণ্ডিতের সহিত দেখা না করিয়া অন্যের সহিত (আলাপ করিতেন না । * শিক্ষাবিভাগের ডিরেক্টার ইয়ং সাহেবের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মতানৈক্য অনেক দিন হইতেই চলিতেছিল। ইয়ং সাহেব সংস্কৃত কলেজের ছাত্রবৃন্দের বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন । তদুপলক্ষে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত ভঁহার মনোমালিন্ত ঘটে । ইয়ং সাহেব পদে পদে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে উত্যক্ত কব্রিতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় ছোটলাট সাহেবকে এ সকল সংবাদ প্ৰকাশ করেন ; কিন্তু তিনি ইয়ং সাহেবের সহিত সম্প্রীতি রাখিয়া কাজ করিবার জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়কে উপদেশ দেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রথমতঃ সে চেষ্টাও করিয়াছিলেন ; কিন্তু শেষে উপায়াস্তুর না দেখিয়া ক্ষোভে, ক্ৰোধে, দুঃখে বিদ্যাসাগর মহাশয় সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ও ইনস্পেক্টরের পদ পরিত্যাগ করেন। পাচশত টাকা বেতনের পদ পরিত্যাগ করিতে তেজস্বী, কৰ্ম্মবীর ঈশ্বরচন্দ্রের হৃদয়ে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা জন্মিল না । ছোটলাট বাহাদুর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তেজস্বিত দর্শনে প্রকৃতই বিস্ময়ান্বিত হইয়াছিলেন। তিনি পুনঃ পুনঃ তাহাকে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করিতে অনুরোধ করিয়াছিলেন ; কিন্তু দৃঢ়চেতা ব্ৰাহ্মণ, কোনও মতেই আর গোলামখানার উষ্ণীষ মাথায় ধারণ করিতে সম্মত হইলেন না। তঁহার এই কাৰ্য্যে আত্মীয় স্বজন সকলেই ক্ষুব্ধ হইয়াছিলেন। পাঁচশত টাকা বেতনের সরকারী কাজ কেঙ্ক অবহেলায় এমন ভাবে ত্যাগ করিতে পারে? অনেকেই এই উপলক্ষে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বুদ্ধির নিন্দাও করিয়াছিলেন। চাকুরিগতপ্ৰাণ বাঙ্গালীর পক্ষে এরূপ দৃষ্টান্ত কল্পনারও অতীত ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় সকলের কথা শুনিয়া