পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাজি মহম্মদ মহসীন RSS করিয়া যান। এ দান যথার্থই সকলকে সে সময়ে বিস্ময়-বিমূঢ় করিয়াছিল। ধৰ্ম্মকাৰ্য্যে ও পারসেবায়ু সমুদয় সম্পত্তি উৎসর্গ করিৱার পর ছয় বৎসর মাত্ৰ মহসীন জীবিত ছিলেন ; ১৮১২ খৃষ্টাব্দে দয়া ও করুণার অবতার, ধৰ্ম্মপ্রাণ মহসীন চিরদিনের জন্য ইহলোক হইতে বিদায় গ্ৰহণ করেন। সন্ন্যাসী মহসীনের আদর্শ জীবনের কথা স্বল্পে শেষ করা যায় নাএক গুণের কথা বলিতে শত গুণের কিরণসম্পাতি চক্ষে প্ৰতিফলিত হয়। মোসলেম-ধৰ্ম্মনিষ্ঠগণ। প্রায়ই হিন্দুবিদ্বেষী হন-এমন কি, বিধৰ্ম্মীকে তঁাহারা কাফের আখ্যা দিতেও কুষ্ঠিত হন না-হাজি সাহেব নিষ্ঠাবান “মিয়া’ ছিলেন, কিন্তু তঁহার ধৰ্ম্মবিশ্বাসে সাম্প্রদায়িক সঙ্কীর্ণতা একেবারেই ছিল না, তাহার জমিদারীতে হিন্দু মুসলমান উভয় ধৰ্ম্মাবলম্বী অনেক কৰ্ম্মচারী ছিল ; কতকগুলি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপূর্ণ মৌলভী হিন্দু-কৰ্ম্মচারীনিয়োগে তাহাকে বাধা দিয়াছিলেন। মহসীন বিনীতভাবে তাহদের নিবেদন করেন যে, “আমার জমিদারীতে হিন্দু প্ৰজাই বেশী, হিন্দুদের মধ্যে শিক্ষিতের সংখ্যা বেশী ও অল্প বেতনে তঁহাদের দ্বারা ভাল ও বেশী কাজ পাওয়া যায়, আমি এ সম্বন্ধে আকবরের নীতিই উৎকৃষ্ট মনে করি। তিনি রাজস্ববিভাগে সমস্তই হিন্দুকৰ্ম্মচারী নিয়োজিত করিয়া হিন্দু মুসলমানের ভেদনীতির মূলে কুঠারাঘাত করিয়াছিলেন। মহসীন সম্পত্তির বিপুল বিত্ত ঈইতে নিজের বায় নিৰ্বাহ না করিয়া সামান্য দর্জির কাৰ্য্যে জীবিকা অর্জন করিতেন-তরবারী চালনায়ও তঁহার দক্ষতা ছিল, নিজের সামান্য খাদ্য স্বহস্তে পাক করিয়া আহার করিতেন। মহসীন-ফণ্ডের অর্থে হুগলী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজসাহীর মাদ্রাসা কলেজগুলি চলিতেছে, এতদ্ভিন্ন সমগ্ৰ বঙ্গের মুসলমান ছাত্ৰগণ এই ফাণ্ড হইতে নানাপ্রকার সাহায্য লাভ করিতেছে ;