পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& e ভারত-প্রতিভা এক মুহূৰ্ত্তও মহসীন বৃথাকাৰ্য্যে যাপন করিতেন না। সৰ্ব্বক্ষণই হয় তিনি অধ্যয়ন, নয়ত ধৰ্ম্মালোচনা, অথবা কোনও প্রকার লোকহিতকর অনুষ্ঠানে ব্যাপৃত থাকিতেন । মহসীনের দয়া, দক্ষিণা, ধৰ্ম্মপরায়ণতা প্রভৃতি গুণে সকলেই তঁহার পরম অনুগত হইয়া পড়িয়াছিল। লোকশিক্ষার জন্য তিনি হুগলীতে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করিয়া সাধারণের বিদ্যালাভের পথ সুগম কবিয়া দিয়াছিলেন। সে বিদ্যালয়ে জাতিবিচার ছিল না। শুধু তাহাই নহে, যশোহর, চট্টগ্রাম প্রভৃতি স্থানের মাদ্রাসাগুলির ক্রমোন্নতির জন্য তিনি যথেষ্ট অর্থ সাহায্য প্ৰদান করিতেন । দানবীর মহসীনের কীৰ্ত্তিকলাপ চারিদিকে ছডাইয়া পড়িয়ছিল। তঁহার কাছে, হিন্দু মুসলমানের মধ্যে কোনও পার্থক্য ছিল না। তিনি সকলকেই সমান চক্ষে দর্শন করিতেন । আচার-ব্যবহারে তিনি কোনও প্ৰকার গোড়ামীর পরিচয় কোনও দিন দেন নাই। গুম্বক শ্মশ্র রাখার দিকে তঁহার আদৌ বাসনা ছিল না। হিন্দু কৰ্ম্মচারিবৃন্দে পরিবেষ্টিত হইয়া মুণ্ডিত শীর্ষ, গুম্ফা-শুশ্রীহীন মহসীন যখন বসিয়া থাকিতেন, তখন প্রকৃতই কেহ তঁহাকে মুসলমান বলিয়া বুঝিতে পারিত না । মহসীন সঙ্গীতের প্রিয় ছিলেন ; কিন্তু ধৰ্ম্ম বা ঈশ্বর বিষয়ক গান বাতীত, টপ্পা, খেয়াল অথবা বৈঠকী গানের পক্ষপাতী ছিলেন না । ভগবানের নাম গান যে ভাবেই হউক না কেন, শ্রবণমাত্রই তঁহার নয়ন হইতে অশ্রুধারা ঝরিয়া পড়িত। তিনি নিরামিষাশী ছিলেন। কিছুকাল পরে ১৮০৬ খৃষ্টাব্দের ৯ই জুন তারিখে ধৰ্ম্মবীর, দানবীর, কৰ্ম্মবীর মহসীন উইলদ্বারা ১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকার আয়ের বিপুল সম্পত্তির সমুদয়ই দীনদরিদ্র, অভাব পীড়িতের সেবার জন্য উৎসর্গ