পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১৪ ভারত-প্রতিভা গুরুমহাশয়ের প্ৰহারের ভয়ে পাঠশালায় ছাত্ৰগণ সর্বদাই সন্ত্রস্ত থাকিত। অনেকে চুরি করিতেও শিখিত। পরিণত বয়সে আত্মজীবন কাহিনী । রচনাকালে রামতনু বাবু লিখিয়াছিলেন যে, তিনিও অন্য বালকের প্ররোচনায় বাল্যকালে চুরি করিতে শিখিয়াছিলেন। বাল্যকালে রামতনুর ঘোড়ায় চড়িবার প্রবল আগ্রহ ছিল। সমবয়স্ক : বালকবৃন্দের সহায়তায় গ্রামে ভারবাহী ঘোড়াগুলি ধরিয়া রামতনু ঘোড়ায় চড়ার সখ মিটাইতেন। শুধু তােহাঁই নহে, ক্লষ্ণনগরের চতুর্দিকেই তখন অসংখ্য মনোরম উদ্যান ছিল, সেই সকল উদ্যান তঁাহাদের বিহারভূমি হইয়াছিল। কুসঙ্গে মিশিয়। রামতনুর ভবিষ্যৎ অন্ধকার জনক হইবে এই আশঙ্কায় তদীয় জনক জননীর হৃদয় ভরিয়া উঠিল। তঁহার রামতনুকে কৃষ্ণনগর হইতে অন্যত্র রাখিবার জন্য বিশেষ বাস্ত হইয়া উঠিলেন। রামকৃষ্ণ ও নিজে সাধুস্বভাব ছিলেন বলিয়া সকলেই তাঁহাকে সাধু-রামকৃষ্ণ বলিয়া অভিহিত করিত। তিনি সন্তানদিগকে সৰ্ব্বদাই চক্ষে চক্ষে রাখিবার চেষ্টা করিতেন ; কিন্তু দিবারাত্ৰ কি চোখে চোখে রাখা সম্ভবপর ? রামতনুর পিতামাতা দেখিলেন যে, দ্বাদশবৰ্ষীয় বালক, সেই বয়সেই অকালপক্কতার পথে অগ্রসর হইয়াছেন । তদীয় জ্যেষ্ঠ সহোদর কেশবচন্দ্র তখন আলিপুরে। কাৰ্য্য করিতেন। তঁহার বাসা কালীঘাটের পরপরবর্তী --চেতলা গ্রামে ছিল। পরামর্শের পর স্থির হইল, রামতনু কেশবচন্দ্রের চেতলার বাসায় থাকিয়া পড়াশুনা করিবেন, নহিলে কৃষ্ণনগরে থাকিলে তাহার পরিণাম শুভজনক হইবে না। ১৮২৬ খৃষ্টাব্দে দ্বাদশ বৎসর বয়ঃক্রমকালে রামতনু জ্যেষ্ঠের চেতলাস্থিত * বাংলায় আসিলেন। কেশবচন্দ্র তখন মাসে ত্ৰিশ টাকা বেতন পাইতেন ।