পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিক্ষা পাইবে । রাজা রাধাকান্ত দেব সভাপতি ; দেবেন্দ্রনাথ ও হরিণ মোহন সেন সম্পাদক ও ভূদেব মুখোপাধ্যায় প্রধান শিক্ষক নিৰ্বাচিত হইলেন। হিন্দুচুড়ামণি রাজা রাধাকান্ত দেব এই সময় দেবেন্দ্রনাথকে পত্রিকার প্রবন্ধে ও ব্ৰাহ্মসমাজের সাপ্তাহিক উপদেশে ব্রাহ্মধৰ্ম্মের বিস্তারে খৃষ্টধৰ্ম্মের প্রচার-কাৰ্য্যে বাধা প্ৰাপ্ত হইয়া পাদ্রীরা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার তীব্র সমালোচনা ও ব্রাহ্মসমাজের বিরুদ্ধে পুস্তিকা প্রচার ও বক্তৃতা করিতে লাগিলেন । ব্ৰাহ্মধৰ্ম্মগ্রহণের সময় দেবেন্দ্রনাথ পৌত্তলিক অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন। না বলিয়া প্ৰতিজ্ঞা করিয়াছিলেন। তঁহাদের বাড়ীতে মহাসমারোহে দুর্গোৎসব হইত ; তিনি তাহাতে নির্লিপ্ত থাকিয়া রাস্তায় রাস্তায় ঘূরিয়া বেড়াইতেন। ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের শ্রাবণ মাসে বিলাতে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয়-ভাদ্রমাসে দেবেন্দ্রনাথ পিতৃবিয়োগ-সংবাদ পাইয়া নিয়মমত অশৌচ গ্রহণ ও ব্রহ্মচৰ্য্য পালন করেন। রাজা রাধাকান্ত দেব, প্ৰসন্নকুমার ঠাকুর, রমানাথ ঠাকুর প্রভৃতি সকলেই তঁহাকে শাস্ত্ৰবিধানমন্ত শ্ৰাদ্ধ সুসম্পন্ন করিবার জন্য পরামর্শ দিলেন, এবং অনুরোধ করিলেন । দেবেন্দ্রনাথ বিষম সমস্যায় পড়িলেন। হঠাৎ রাত্রে স্বপ্নে প্ৰত্যাদেশ পাইয়া তিনি হিন্দুরীতি অনুসারে শ্ৰাদ্ধ না করিয়া নির্দিষ্ট মন্ত্রে স্বতন্ত্র-ভাবে কেবল দান উৎসর্গ করিলেন। জ্ঞাতি-কুটুম্বোরা ইহাতে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হইয়া নিমন্ত্রণে আসিলেন না। মহর্ষি বলিয়াছেন—“জ্ঞাতিকুটুম্বের আমায় ত্যাগ করিলেন ; কিন্তু ঈশ্বর আমায় আরও গ্রহণ করিলেন। ধৰ্ম্মের জয়ে আমি আত্মপ্রসাদ লাভ করিলাম। এ ছাড়া আমি আর কিছুই চাই না।”