পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্ৰহ্মানন্দ কেশবন্দ্ৰ সেন । । | ৩৯ সামান্য বেশে থাকিতেন, সুখভোগ তাহার ভাল লাগিত না । বিবাহের পর স্ত্রীর সৌন্দর্ঘ্যে কেশবচন্দ্ৰ আকৃষ্ট হইলেন না, স্ত্রীকে যথোচিত ভালবাসিতে পারিলেন না। তিনি ‘জীবন-বেদে লিখিয়াছেন,-“চতুৰ্দশ বৎসরেই মৎস্যভক্ষণ পরিত্যাগ করিলাম । * * এক গুরু জানিতাম, তঁহাকেই মানিতাম, তঁহাকে বিবেক বলিতাম। * * যত প্ৰকার সুখভোগ যৌবনে হয়, তৎসমুদয় বিষবৎ ত্যাগ করিলাম। * * যাহাতে কষ্ট হয়, গাম্ভীৰ্য্যবৃদ্ধি হয়, কুচিন্তার দিকে মন না যায়, এমন সকল বিষয়েই নিযুক্ত হইতাম।** বিবেক ও বৈরাগ্য দুই ভাই মিলিয়া জীবনকে শাসন করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন, পরে দেখি, সংসার কাছে আসিতে পারিল না । আত্মীয়াপীড়ন ও ভাৰ্য্যাপীড়ন দ্বারা ধৰ্ম্মজীবন আরম্ভ হইল।” তাঁহার হৃদয় হইতে ‘প্রার্থনা করি, প্রার্থনা কর’—এই ভাব সৰ্ব্বদাই উত্থিত হইতে লাগিল । * “প্রার্থনা করিলাম। * ¥ এমন সময় ছিল, যখন আমার প্রার্থনা ব্যতীত আর কিছুই ছিল না।” কেশবচন্দ্ৰ ভক্তি-নম্র-হৃদয়ে ব্যাকুলভাবে প্রার্থনা করিতে লাগিলেন। তঁহার অন্তরে ধম্মের দিব্য প্ৰভা, স্নিগ্ধ শান্তি উদ্ভাসিত হইল । কেশবচন্দ্ৰ বৈষ্ণব-পরিবারে জন্মিয়া বাল্যকাল হইতেই বৈষ্ণব-ধৰ্ম্মের অনুরাগী ছিলেন ; কিন্তু পাশ্চাত্য দার্শনিকগণের গ্ৰন্থরাজি পাঠ করিয়া ক্ৰমে শ্ৰীকৃষ্ণের অবতারত্বে তাহার সন্দেহ জন্মিল-তিনি দেবদেবীগণের প্রতি ভক্তি হারাইলেন। নিরাকার ঈশ্বরের ধ্যানে নিমগ্ন হইয়া, তাহার নিকট প্রার্থনা করিয়া হৃদয়ের নিভৃত মৰ্ম্মে তঁহার বাণী শুনিলেন। পাদ্রী বারণ সাহেবের নিকট বাইবেল পড়িয়া ও পাদ্ৰী লঙ সাহেবের বক্তৃতায় মুগ্ধ হইয়া কেশবচন্দ্ৰ খৃষ্টধৰ্ম্মে আকৃষ্ট হইলেন। এই সময় রাজনারায়ণ বস্তু মহাশয়ের ব্ৰাহ্মধৰ্ম্মের বক্তৃতাসমষ্টি পাঠ করিয়া ব্রাহ্মসমাজের মত ও বিশ্বাসের সহিত