পাতা:ভারত-প্রতিভা (প্রথম খণ্ড) - সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাত্মা বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী । ११ ॥ গোস্বামী শিশু-সম-সরল বিজয়কৃষ্ণ সংস্কৃত-শিক্ষায় প্ৰবৃত্ত হইয়া মধ্যে মধ্যে তীব্র বিদ্রুপবাণে বিব্রত হইতেন ! “বীরপূজা” প্রবন্ধে বিদ্যাভূষণ মহাশয় লিথিয়াছেন ঃ-“সংস্কৃত কলেজের ঘোর নাস্তিকতার সময় আমরা পাচ বন্ধু ‘ভাগবত” বলিয়া উপহাসিত হইতাম। সেই ঠাট্টা-বিদ্রুপের মধ্য দিয়া আমাদের ভগবদ্ভক্তি দিন দিন উপচিত হইতে লাগিল।” শিক্ষিত সমাজে এই সময় সুরাস্রোত অপ্রতিহতভাবে প্রবাহিত ছিল। বিজয়কৃষ্ণের ধৰ্ম্মনিষ্ঠা ও সংস্কার তঁহাকে পানদোষ হইতে রক্ষা করিয়াছিল। তিনি আত্মবিবরণে লিখিয়াছেন ঃ-“আমি অদ্বৈতবংশের গোস্বামী, আমি সুরাপান করিলে আমার নিৰ্ম্মল পিতৃকুল কলঙ্কিত হইবে ; কেবল এই সংস্কার অনেক সময় আমাকে কুসংস্কার-নরক হইতে রক্ষা করিয়াছে।” কিন্তু সঙ্গিগণের বিভিন্ন ধৰ্ম্মমত ও ধৰ্ম্মভাব তাহার ধৰ্ম্মনিষ্ঠার ও অটল ধৰ্ম্মবিশ্বাসে অনাস্থ্য জন্মাইয়াছিল। তিনি সাতরাগাছি হইতে হাটিয়া প্ৰত্যহ সংস্কৃত কলেজে আসিতেন। তখনও হাবড়ার পোল নিৰ্ম্মিত হয় নাই-প্রবল ঝড়-বৃষ্টি অগ্ৰাহা করিয়া পার হইয়া কলেজে যাইতেন । এই সময় রামচন্দ্ৰ ভাদুড়ীর ছয় বৎসরের কন্যা যোগমায়া দেবীর সহিত তাহার বিবাহ হয়। সাধবী যোগমায়া দেবী সহধৰ্ম্মিণীরূপে আজীবন স্বামীর ধৰ্ম্মসাধনায় সহায়তা করিয়াছিলেন। গুণবতী পত্নীর চরিত্র মহনীয় বরণীয় করিবার জন্য বিজয়কৃষ্ণ সর্বদা তীক্ষ্ণদৃষ্টি রাখিতেন-সামান্ত ক্ৰটী দেখিলেও সংশোধনের প্রয়াস পাইতেন। বন্ধুবর নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নিকট তিনি স্ত্রীকে শিক্ষিতা করিয়াছিলেন। সংস্কৃত কলেজে পাঠকালে হিন্দুশাস্ত্রের অধ্যয়নে তঁহার প্রবল অনুরাগ জন্মে। তিনি বেদান্তচর্চায় মনোনিবেশ করিয়া ঘোরতর বৈদান্তিক