পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিযুক্ত করেন এবং পুরন্দর খাঁ উপাধি দেন। এ ছাড়া পুরস্কার স্বরুপ তাঁকে মহিনগরের কাছে একটি জায়গীর দেন—পুরন্দর খাঁর নাম অনুসারে এখন ঐ জায়গার নাম পুরন্দরপুর। পুরন্দরপুরে ‘খাঁ পুকুর” নামে এক মাইল দীর্ঘ একটি পুষ্করিণীর ভগ্নাবশেষ এখনো আছে। মহিনগরের কাছে মালঞ্চ নামে যে গ্রামটি আছে সেটি পুরন্দনের বাগানের উপর গড়ে উঠেছিল। সে সময়ে হগলি নদী মহিনগরের খুব কাছ দিয়ে বয়ে যেত। শোনা যায় পুরন্দর নাকি নৌকায় হুগলি দিয়ে বাঙলার তৎকালীন রাজধানী গৌড়ে যাতায়াড় করতেন। তাঁরই চেষ্টায় একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে উঠেছিল। সমাজসংস্কারক হিসেবেও পুরন্দরের দান কম নয়। তাঁর আমলের আগে বল্লাল্লী রীতি অনুসারে কায়স্থদের দুটি বিভাগ কুলীন (ঘোষ, বোস, মিত্র) ও মৌলিকের (দত্ত, দে, রায় ইত্যাদি) মধ্যে বিবাহ চলত। পুরন্দর নতুন নিয়ম করলেন যে কুলীন পরিবারের শ‍ুধু জ্যেষ্ঠ সন্তানকেই কুলীন পরিবারে বিয়ে করতে হবে, আর সকলে মৌলিক পরিবারে বিয়ে করতে পারবে। এই রীতি আজ পর্যন্ত চলে আসছে। এর ফলে অতিরিক্ত অন্তর্বিবাহের কুফল থেকে কায়স্থরা রক্ষা পেয়েছে। সাহিত্যিক হিসেবেও পুরন্দরের নাম আছে। তিনি অনেক বৈষ্ণব পদাবলী রচনা করেছিলেন।

কবিরামের ‘রায়মঙ্গল’ ও আরো কয়েকটি বাংলা কাব্য থেকে জানা যায় যে দুশো বছর আগে হগলি নদী (যাকে বাঙলায় সাধারণত বলা হয় ‘গঙ্গা’) মহিনগর ও তার আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হত। তারপর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে ভিন্ন ধারা নেয়। আজও ও অঞ্চলের অনেক পুষ্করিণীকে ‘গঙ্গা' বলা হয়—যেমন ‘বোসের গঙ্গা’। গঙ্গার এই