পাতা:ভারত পথিক - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছেলেটি তার দলের কাছে আমাদের সম্বন্ধে একটি বিবৃতি পেশ করেছিল। কিছুদিনের মধ্যেই সেই দলের প্রধানের কাছ থেকে সেই সুত্রে আমরা চিঠি পেলাম। এইভাবে দলটির সঙ্গে আমাদের যে মোগামোগ ঘটল বেশ কয়েক বছর তা টিঁকে ছিল।

স্কুল ছাড়ার সময় যতোই এগিয়ে আসতে লাগল, আমার মধ্যে ধর্মভাবও তেমনি তীব্রতর হয়ে উঠল। লেখাপড়ায় মন রইল না। আমাদের একমাত্র কাজ হল তখন দলবেঁধে বাইরে গিয়ে যতক্ষণ ইচ্ছে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করা। শিক্ষকদের দু-একজন বাদে কাউকেই আমাদের ভালো লাগত না। যে দু-একজনকে ভালো লাগত তাঁরা ছিলেন রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের ভক্ত। এই সময়ে বাবা মার গ‍ুর‍ুদেব কটকে এলেন। (ইনি বাবা মার প্রথম গ‍ুর‍ু, এর মত্যুর পর তাঁরা আর এক গ‍ুর‍ুর কাছে দীক্ষা নেন।) তিনি আমার মধ্যে ধর্মভাব আরো বেশি করে জাগিয়ে দিলেন। কিন্তু তাঁর প্রভাব আমার উপর খুব বেশি খাটল না, কারণ তিনি ‘সন্ন্যাসী’ ছিলেন না। শিক্ষকদের মধ্যে একজনেরই মাত্র রাজনৈতিক চেতনা কিছুটা ছিল। স্কুলের পড়া শেষ করে যখন আমি কলকাতায় আসার জন্য তোড়জোড় করছি, তিনি আমাকে অভিনন্দন জানালেন, বললেন কলকাতায় গেলে অনেক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা হবে, তাতে আমার রাজনৈতিক চেতনা বাড়বে।

ছেলেবেলায় আমাদের যেসব অভিজ্ঞতা হয় তার স্মৃতি বহুদিন পর্যন্ত টিঁকে থাকে এবং মনকে গভীৱভাবে প্রভাবান্বিত করে। মনে পড়ে ছোটোবেলায় চাকরবাকর বা বাড়ির বয়স্কদের কাছে খুব ভূতের গল্প শুনতাম। একটা বিশেষ গাছ ভূতের আস্তানা বলে পরিচিত ছিল। রাত্তিরে যখন ভূতের গল্প শুনতাম ভয়ে আমার হাতপা হিম

৫৬