পাতা:ভারত ভ্রমণ - তারিনীকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী .pdf/৫১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চুনার । খৃষ্টাব্দে মোগল বাদশাহগণের প্রথম সম্রাট বাবরশাহ ১৫২৯ খৃষ্টাব্দে বারাণসী আক্রমণ করেন তখন সসৈন্যে নিজে এই দুর্গে ছিলেন। ইনি এ দুর্গ জয় করেন নাই। পৃথ্বীরাজের পর সৈরুদ্দীন সবক্তালন এ দুর্গ অধিকার করেন। তদবধি ইহা মুসলমানের হাতেই ছিল, কিন্তু সিংহদ্বারের উপরিস্থ একখানি ভগ্নশিলালিপি হইতে জানা গিয়াছে যে স্বামীরাজ নামে এক হিন্দু ১৩৯০ সম্বতে ( ১৩৩৩ খৃষ্টাব্দে) এই দুৰ্গ মুসলমানের হাত হইতে উদ্ধার করেন এবং সেই জয় ঘোষণার্থ ঐ খোদিত লিপিফলক স্থাপন করেন । *; বাবরশাহের মৃত্যুর পরে শেরশাহ এইস্থানে আবাসভবন ও সুনাগার নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন তিনি বিবাহসূত্রে শ্বশুরের নিকট ইহা প্ৰাপ্ত হন। ১৫৩৬ খৃষ্টাব্দে হুমায়ুন উহা অধিকার করেন, কিন্তু তিনি বাঙ্গালা জয়ে গেলে শেরশাহ উহা পুনরায় অধিকার করেন এবং বাঙ্গালা হইতে প্ৰত্যাগমন করিলে হুমায়ুনকে পরাস্ত করিয়া দিল্লী অধিকার করেন। শেরশাহের সৌধাবলী এখন শিলহখানা বা অস্ত্রাগার নামে পরিচিত। শেরশাহের দেহাবসানের পর ১৫৭৫ খৃষ্টাব্দে আকবর এই গড় পুনরায় অধিকার করেন। মহাত্মা আকবর গড়ের ভিতর হইতে গঙ্গাজল আনিবার জন্য যে একটী দ্বারা নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন তাহাকে পানিঘাটের দ্বার কহে। উহার উপর দ্বারা নিৰ্ম্মাণের সন তারিখ ইত্যাদি খোদিত আছে। ১৭৫০ খৃষ্টাব্দে এই দুর্গ কাশীরাজ বলবন্ত সিংহ অধিকার করেন। ১৭৬৩ খৃষ্টাব্দে মেজর মনরো ইংরাজ সৈন্য লইয়া এই দুর্গ জয় করিতে | °ांद्रन नद्दे । ১৭৬৫ খ্ৰীষ্টাব্দে সৈন্যাধ্যক্ষ কাৰ্ণাক ইহা জয় করিয়া ১৭৭২ খৃষ্টাব্দের সন্ধিবলে ইহার অধিকার প্রাপ্ত হন। সে অবধি ইহা ব্রিটিশ সিংহের করতলগত আছে। ১৭৮১ সালে কাশীরাজ চৈত সিংহের সহিত কলহের সময় ওয়ারেণ হেষ্টিংস এই দুর্গে বাস করিতেন। দুর্গের সর্বোচ্চ সৌধটিই তঁহার বাসস্থান। এই দুর্গ ইংরেজদের অধীনে আসিলে কিছুকাল পৰ্য্যন্ত ইহা পশ্চিমাঞ্চলের অস্ত্রাগার স্বরূপ এবং তাহার পরে ইহাকে জেলখানারূপে ব্যবহার করিয়াছিলেন।