পাতা:ভেজাল - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যবস্থা হয়েছিল, বিলামসন অকাট্য যুক্তি দেখিয়ে বলল, “মিষ্টার জ্যাকসনের সঙ্গে আমার সর্বদা নানা বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। বুঝতে পারছি না, রায় ? নতুন রাস্তা, স্কুল, কারখানা, আরও কত বিষয়ে • কত কথা বলতে হবে। ওরা আমার বাড়িতেই থাকবে।” এই প্ৰথমবার বিলামসন মহীধরের নতুন বাড়িকে আমার বাড়ি বলে ঘোষণা করল। কিন্তু কথাটা যেন মোটেই খাপছাড়া শোনাল না। তার মুখে। জ্যাকসন সাহেবের পর এসেছিলেন স্মিথ সাহেব ও বেনেট সাহেব। এদের দুজনেরই পত্নীরা মিসেস বিলামসনের এবং ছেলেমেয়েরা আর্থার ও অরেল্যের প্রাণের বন্ধু । সুতরাং এরাও যে বিলামসনের বাড়িতে বাস করে যাবে সেটা খুবই স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। সকলের। একটা রাজ্যের সমান মহীধরের জমিদারী-বিলামসনের তত্ত্বাবধানে দিন দিন জমিদারীর উন্নতি হতে লাগল। লোকটা বিলক্ষণ কর্মঠ এবং উৎসাহী সন্দেহ নেই। নাইবা হবে কেন। পুষ্টকর, উত্তেজক খাদ্য ও পানীয়ের অভাব নেই, বিশ্রাম সে কাজেরই ' অঙ্গ হিসাবে নেয়, অবসর বিনোদন তার অপরিহার্য নিত্যকর্ম, সুপিরিয়রিটি কমপ্লেক্স দিয়ে মনকে সর্বদা তাজা রাখে, তার উপর বেনের মতো বাস্তববাদী বলে মানসিক কর্মের মানেই সে বোঝে না। মহীধরের বাড়িতে ও এষ্টেটে সে যে কত কি করেছে এবং করছে তার বিবরণ সত্যই চমকপ্রদ। পথঘাটের সংস্কার দিয়ে কাজ সুরু হয়। আশেপাশের গায়ের লোক আজ নগরগড়ে নতুন পিচ ঢালা পথে উঠবার আগে ভালো করে পায়ের কাদা ধুয়ে নেয়। গরুর গাড়ি চলে চলে এতকাল সদরে যাবার বড় রাস্তার দফা নিকেশ করে দিত, মাইল পাচেক রাস্তায় এখন গরুর গাড়ির যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। ওপথে এখন মহীধরের, তার অতিথি অভ্যাগতদের এবং বিলামসনের মোটরগাড়ি হস্ হিস ଜ{