পাতা:ভেজাল - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাসের দৃষ্টিগোচর চোখের দিকে পিছন করে দাড়িয়ে শ্ৰীমন্তসহায় তখন অনিচ্ছুক শ্রোতা গোৰখনকে বলছে, “গা থেকে বেরুতে পারি না, তাই মা শ্বশুরের এত জোর! পাঁচ দিন আগে পৌঁছে দিয়ে যাবার কথা, আজও এল না। তাই না বলছিলাম মামাকে, আজকের বাসে এলো তো এলো, না এলে কাল তুমি গিয়ে লিয়ে এসবে। তা মামা । বলে, উহু, সেটা নিয়ম নয়। মামাশ্বশুর একলাটি ভাগ্নে বৌকে লিয়ে এসবে কি করে, মামাশ্বশুরের ছায়া দেখতে নেই ভাগ্নে-বৌয়ের ? শুনিলি ? এমনি করে রসাতলে যাচ্ছে দেশটা। একবারটি এসে লিক। কি করব জানিস? একটা গোটা দিন রাত বৌ আর মামাটাকে এক ঘরে কুলুপ দিয়ে রেখে দেব।” সর্বাঙ্গে আওয়াজ করতে করতে পুরানো বাস এসে দাঁড়াল। ক্ষুধাত যাত্রীরা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। চা ও খাবারের দোকানে। ড্রাইভার ঈশ্বর এবং ক্লিনার ও কণ্ডাক্টর পটল পর্যন্ত নেমে গেল চা খেতে । নিবারণ গাড়িতে জল দিতে গিয়েছে, ঈশ্বর চেচিয়ে বলল, “আরে ও নিবারণ, জল দিস নি।” নিবারণ বিস্মিত হল, প্ৰতিবাদ করল না । কাছে গিয়ে বলল, ‘চাল কটা দেন ঈশ্বরবাবু, ঘর গিয়ে দুটি রাধি।” ‘মোদের জন্যে রাধবি না ? ঈশ্বর নিবিকীরচিত্তে হাসল, “না, তোর ঘরে আবার রুগী সব কটা। চাল কিন্তু মোটে দেড়সের মিলেছে ভাই।” মৃত্যুর নিমীলনের বদলে জীবনের বিস্ফোরণে দুচােখ প্রায় গোলাকার হল নিবারণের, সে বলল, “দেড় সেৱ ?” “দাম চড়ে গেছে ভাই।” চায়ে চুমুক দিয়ে ঈশ্বর গলা নামাল, ‘বাবুকে বলেছি, সেন সাহেবকে ধরে কিছু চাল সন্তায় পাইয়ে দিতে। পেলে পাঁচ দশ সেরা দেব তোকে ৷” এই সময় হঁপাতে হাপাতে শ্ৰীধন মাইতি এসে পড়ল। বাস একেবারে R