পাতা:ভেজাল - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোকা অপদাৰ্থ ভালোমানুষ হয়ে থেকেই বয়সটা তার ত্ৰিশের কোঠায় পৌছে গেছে। উৎসাহ বা তেজ বলে তার কিছু নেই, অভাববোধ ভোতা হয়ে গেছে। অপরাধ করে বসার ভয়েই সর্বদা সে সন্ত্রস্ত । বিশেষ করে ভূষণের কাছে । মোটাসোটা জমকালো শরীর ভূষণের, প্ৰকাণ্ড মাথায় ঠাসবুনানি কদমকেশর চুল, ফোলা ফোলা গাল, নাকের বড় বড় গহবর দুটি কঁচাপাকা চুলে ভরা। পুরাণ ইতিহাস রূপকথার নিষ্ঠুর অত্যাচারী চরিত্রগুলি ভূষণের এই চেহারার ধাঁচেই শুধু প্ৰসাদ কল্পনা করতে পারে। প্রচণ্ড শক্তি আর নির্মম কঠোরতার প্রতীক। অবশ্য আছেন তার দেবতারা, কিন্তু তার মনে তাদের প্রভাবও ভূষণের মতো জোরালো নয়। ভূষণ প্রত্যক্ষ, জীবন্ত। প্রতি মুহূতে তার অস্তিত্ব, তার উপস্থিতি অনুভব করা যায় । “দাড়িয়ে রইলে যে ?”

  • ए८अ न, शछिं ।।' গেরুয়া রঙের ছোট টাইট জামাটি গায়ে দিয়ে সে টাকাগুলি ন্যাকড়ায়

বেঁধে পকেটে রাখল। এতটুকু দায়িত্ব নিয়েই নিজেকে তার বিপন্ন অসহায় মনে হচ্ছে। আশাকে ইসারায় ডাকতে দেখে আরেকবার বুকটা তার কেঁপে গেল। ‘জাম পেড়ে এনে আমার জন্যে ।” “আক্তে হঁ্যা, আনিব।” “মরণ তোমার আঙ্গে হুজুর ?--আশা গা-ঢালানো হাসির সঙ্গে হাত বাড়িয়ে তার চিবুকটা ধরে নেড়ে দিল, “বৌঠান বলতে পার না ?” চেরা ঠোঁটের ফঁাকে আশার উপরের পাটির দুটি ঘষা শ্বেত পাথরের মতো অনুজ্জল দাত সবসময়েই চোখে পড়ে, কথা কইতে বা হাসতে গেলে অন্তরালের আরেকটি দাতে খেলে যায় সোনালী ঝিলিক। R