বিলক্ষণ রূপে অভ্যাস না করিয়া, আমি বিবাহ করিব না। চন্দ্রপ্রভা শুনিয়া হাস্যমুখে কহিলেন, ভগিনি। যত অভ্যাস কর না কেন, কখনই অবিরক্ত চিত্তে সংসারধর্ম্ম নির্ব্বাহ করিতে পারবে না। পুরুষের পদে পদে অত্যাচার; কত সহ্য করিবে, বল। তুমি পুরুষের আচরণের বিষয় সবিশেষ জান না, এজন্য ওরূপ কহিতেছ; যখন ঠেকিবে, তখন শিখিবে; এখন মুখে ওরূপ বলিলে কি হইবে। বিশেষতঃ, পরের বেলায় আমরা উপদেশ দিতে বিলক্ষণ পটু, আপনার বেলায় বুদ্ধিভ্রংশ ঘটে; তখন বিবেচনাও থাকে না, সহিষ্ণুতাও থাকে না। তুমি এখন আমায় ধৈর্য্য অবলম্বন করিতে বলিতেছ; কিন্তু যদি কখনও বিবাহ কর, আমার মত অবস্থায় কত ধৈর্য্য অবলম্বন করিয়া চল, দেখিব।
উভয়ের এইরূপ কথোপকথন হইতেছে, এমন সময়ে কিঙ্কর, বিষন্ন বদনে তাঁহাদের সম্মুখবর্তী হইল। চন্দ্রপ্রভা জিজ্ঞাসা করিলেন, কিঙ্কর! তুমি যে একাকী আসিলে; তোমার প্রভু কোথায়; তাহার দেখা পাইয়াছ কি না; কত ক্ষণে গৃহে আসিবেন, বলিলেন। কিঙ্কর কহিল, মা ঠাকুরাণি! আমার বলিতে শঙ্কা হইতেছে; কিন্তু না বলিলে নয়, এজন্য বলিতেছি। আমি তাহাকে যেরূপ দেখিলাম, তাহাতে আমার স্পষ্ট বোধ হইল, তাঁহার বুদ্ধিভ্রংশ ঘটিয়াছে, তাঁহাতে উন্মাদের সম্পূর্ণ লক্ষণ লক্ষিত হইতেছে। আমি কহিলাম, কর্ত্রী ঠাকুরাণীর আদেশে, আমি আপনাকে ডাকিতে আসিয়াছি, ত্বরায় গৃহে চলুন, আহারের সময় বহিয়া যাইতেছে। তিনি আমার দেখিয়া,