পাতা:ভ্রান্তিবিলাস.djvu/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
ভ্রান্তিবিলাস।

করিতে পায়। শুনিয়া, কোপে কম্পিতকলেবর হইয়া, চিরঞ্জীব কহিলেন, তুই বেটা বড় পাজি ও বড় ছোট লোক, অকারণে আমায় কটু বলিতেছিস। আমি ভদ্র কি অভদ্র, তাহা এখনই তোরে শিখাইতেছি। মর বেটা পাজি, যত বড় মুখ, তত বড় কথা। এই বলিয়া, তিনি তরবারি নিকাশিত করিলেন, এবং বণিকও তরবারি নিষ্কাশিত করিয়া, দ্বন্দ্বযুদ্ধে উদ্যত হইলেন।

 এই সময়ে চন্দ্রপ্রভা, কতকগুলি লোক সঙ্গে করিয়া, সহসা সেই স্থানে উপস্থিত হইলেন এবং বণিকের সহিত হেমকূটবাসী চিরজীবের দ্বন্দ্বযুদ্ধের উপক্রম দেখিয়া, স্বীয় পতি জয়স্থলবাসী চিরঞ্জীব তাদৃশ যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতেছেন, এই বোধে, সাতিশয় কাতরতা প্রদর্শন পূর্ব্বক, বণিককে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, দোহাই ধর্ম্মের, উঁহারে প্রহার করিবেন না, উনি উন্মাদগ্রস্ত হইয়াছেন। এ অবস্থায়, কোনও কারণে উঁহার উপর রাগ করা উচিত নয়। কৃতাঞ্জলিপুটে বলিতেছি, দয়া করিয়া ক্ষান্ত হউন। এই বলিয়া, তিনি সঙ্গের লোকদিগকে কহিলেন, তোমরা, কৌশল করিয়া, উঁহার হাত হইতে তরবারি ছাড়াইয়া লও, এবং প্রভু ও ভৃত্য উভয়কে বন্ধন করিয়া আমার আলয়ে লইয়া চল। চন্দ্রপ্রভাকে সহসা সমাগত দেখিয়া ও তদীয় আদেশবাক্য শ্রবণ করিয়া, কিঙ্কর চিরঞ্জীবকে কহিল, মহাশয়! আবার সেই মায়াবিনী ঠাকুরাণী আসিয়াছেন; আর এখানে দাঁড়াইবেন না, পলায়ন করুন; নতুবা নিস্তার নাই। এই বলিয়া, সে চারি দিকে দৃষ্টি সঞ্চারণ করিয়া কহিল, মহাশয়!