পাতা:মতিয়া বিবি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
দারোগার দপ্তর, ১৩৩ সংখ্যা।

 এখন স্থির হইল, সর্ব্বাগ্রে ঐ লোহার সিন্দুক খুলিয়া দেখা। অনুসন্ধান করিয়া লোহার সিন্দুকের চাবি পাওয়া যায় নাই; সুতরাং অন্য উপায়ে ঐ লোহার সিন্দুক খুলিবার বা উহা ভাঙ্গিবার চেষ্টা দেখিতে হইল। জানিতে পারিলাম, অনতিদূরে জনৈক লোহার সিন্দুক নির্ম্মাতার একটী কারখানা আছে। সুতরাং তাহাকে ডাকাইতে হইল। তিনি আসিয়া প্রথমতঃ ঐ সিন্দুক খুলিবার নিমিত্ত বিশেষরূপ চেষ্টা করিলেন; কিন্তু কোনরূপে কৃতকার্য্য হইতে না পারিয়া, পরিশেষে কয়েকটা লোহার খিল বা “নেচি” কাটিয়া ঐ দিন্দুকের ডালা খুলিয়া দিল।

 তালাটী স্থানান্তরিত করিয়া দেখিলাম—সর্ব্বনাশ! ইতিপূর্ব্বে মনে যাহা ভাবিয়াছিলাম, দেখিলাম ঠিক তাহাই ঘটয়াছে। ঐ সিন্দুকের মধ্যে তারামণির মৃতদেহ রহিয়াছে। ঐ মৃতদেহ ভয়ানক পচিয়া গিয়াছে, ও তাহা হইতে অতিশয় দুর্গন্ধ বাহির হইতেছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কতকগুলি পিপীলিকা কেবল উহার স্থানে স্থানে কাটিয়া খাইয়া ফেলিয়াছে। নিতান্ত সঙ্কীর্ণ স্থানের মধ্যে ঐ মৃতদেহ রক্ষিত আছে; কিন্তু উহার হস্ত পদ প্রভৃতির কোন স্থান কোনরূপে বন্ধন করিয়া রাখা হয় নাই। মৃতদেহ অতিশয় পচিয়া গিয়াছে এবং উহার মুখ দেখিয়াও বেশ চিনিতে পারা যাইতেছে না যে, উহা তারামণির মৃতদেহ কি না।

 যেরূপ অবস্থায় তারামণিকে পাওয়া গেল, তাহা দেখিয়া এখন সহজেই অনুমিত হইল যে, কোন দস্যু তারামণির ঘরের দেওয়ালে সিঁদ দিয়া এ ঘরের ভিতর প্রবেশ করিয়া তারামণিকে হত্যা করিয়া তাহার যথা-সর্ব্বস্ব অপহরণ পূর্ব্বক তারামণির মৃতদেহটীকে ঐ লোহার সিন্দুকের মধ্যে আবদ্ধ করিয়া এবং ঐ