পাতা:মধুমতী - পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
মধুমতী।

 গোপালের অবিচলিত স্নেহ দেখিয়া, এবং আপনার পূর্ব্ব প্রণয় স্মরণ করিয়া আদরিণী গঙ্গাস্রোতের উপর দরবিগলিত অশ্রুধারা বর্ষণ করিতে লাগিলেন। তখন, আর দুই পদ অগ্রসর হইয়া, গলদেশ পরিমিত জলে দাঁড়াইয়া, মধুমতী অতি কাতর স্বরে বলিতে লাগিলেন,

 “আমি এখন তোমাকে প্রতারণা করিব না—আমি তোমার গৃহে যাইব কি প্রকারে? আমি পরের। আমার প্রাণ পর্যন্ত পরের। আমি মহা পাপিষ্ঠা। আমি তোমার স্নেহ ভুলিয়া গিয়াছি। আমার সকল ভালবাসা নূতন স্বামীর প্রতি। আমি তোমার গৃহে যাইব না।”

 এই বলিয়া আদরিণী আর একপদ জলে অগ্রসর হইলেন। জল চিবুক পর্যন্ত হইল। তখন মূর্খ গোপাল, আদরিণীর দুরভিসন্ধি সহসা বুঝিতে পারিয়া, ক্ষিপ্তের মত চীৎকার করিয়া নদীর তট প্রতিধ্বনিত করিতে লাগিল; ডাকিল, “আদরিণি—প্রাণাধিকে! ওকি— রক্ষা কর এ সর্ব্বনাশ করিও না।” এই বলিয়া আদরিণীর উভয় হস্ত ধারণ করিয়া আকর্ষণ করিতে লাগিল।

 আদরিণী, অতি ধীরে, অতি মৃদুস্বরে, অধরপ্রান্তে বিশ্বমোহিনী হাসি হাসিয়া, বলিল, “আমি ফিরিব না। কিন্তু তোমার কাছে এক ভিক্ষা। একবার আমায় আ-