পাতা:মধুমতী - পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মধুমতী।
৩১

 আদরিণী বলিল, “আর একটু দাঁড়াও—আমার এখনও বিলম্ব আছে। দাঁড়াইয়াই বা কি করিবে, আমার নিকটে এই জলে আইস, একবার আমরা অগাধ জলেও ডুবি নাই, এই বুক জলে ভয় কি? আমার যাহা বলিবার তাহা এই গঙ্গাজলে দাঁড়াইয়া তোমাকে বলিব।”

 গোপাল জলে নামিয়া আদরিণীর নিকটে গিয়া দাঁড়াইল। আদরিণী বলিল, “আমি যাহা বলিব, বোধ হয় তুমি তাহা বিশ্বাস করিবে না। তুমি বিশ্বাস কর বা না কর আমি সত্য কথা বলিব।”

 এই বলিয়া মধুমতী পূর্ব্ব ঘটনা সকল সেই জ্যোৎস্নাপ্রফুল্লিত গঙ্গাতরঙ্গ মধ্যে দাঁড়াইয়া, সেই বিজন স্তব্ধ মধ্যে মৃদু গম্ভীর স্বরে আদ্যোপান্ত বিবরিত করিল করালীর সহিত বিবাহের কথা বলিল। গোপাল মুমূর্ষুবৎ সকল শুনিল। আদরিণীর কথা সমাপ্ত হইলে গোপাল দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া বলিল।

 “আমার যাহা কপালে ছিল তাহা ঘটিয়াছে। কিন্তু তুমি এক শত বিবাহ করিলেও আমার অত্যজ্য। তুমি আমার গৃহে চল। আমরা এ দেশ ত্যাগ করিয়া, দেশান্তরে গিয়া এ কলঙ্ক লুকাইব। কেহ জানিবে না—আমরা আবার সুখে দিনযাপন করিব।”